Hridoyer Roging Patai???

শনিবার, ৬ আগস্ট, ২০১১
শুক্রবার, ৫ আগস্ট, ২০১১
'''PRIYA'''
soroter sokal belar bindu bindu kuyasai bejhano 1 gucco subho rojoni gondar subecca niyo.sraboner osanto prithebe,
sudhu borshon ar borshon. shuly ful gulo sri hin gondohin hoye zore porte suru korece.soto cestai o gacte ful gulo
zore zore pora rodh korte parce na.tai berthotar lage gacti nuye porce.2din por hoito ota more jabe.sudu sriti
pore robe.......
"Priya"
Akash aj nirob.pakhider dak nei.prakritik sondorjo sompurno bilin hoye jacce.mone hoi ai shemol sundor prithebe
ogotole dube jabe.hariye felece tar sotota naiporayonota o okirtim mayabi valobasa.aj amar sei anondo gono din
gulor kotha mone porce.mone pore amar sathe tomar samanno cola perar kotha.kotai cile tumi ar kotai cilam ami.
2ti poth cilo 2ti mohonai.ake cilam onner ocena......
"Priya"
Jano mon cilo cilona moner mondir.tai parini moner mukure moner madhuri diye sajate.sei mone bagan o cilo.parini
kono ful futate sdu kolitei zore jete dekheci.tobuo valobasa roilo tomar proti.akhon onek rat 4 dik nirob nistobdho
ase pase jonakira mit mit kore alo diye moner anonde ure beracce & prithiber gac pala torilota poshu pakhi manusjon
jar jar priyo jonder niye gumer ghore aconno.tik tokhoni bedonar nesai asokto hoye gore piri.gore pire asar por o
amar 2 cokhe kono gum nei.amar sob asha sob shopno bege curmar kore dile......
"Priya"
aj soto koste o klanto mon niye aseci dur duranto theke asece onek asai monke jagroto korar jonno,cute colece tomar
na pawya cither sondane obosese pelam akash baga bedona.naki bolbo hai jemes kemirun tomar cobite sudu jahaz dubene
dubece oneker mon pran valobasa.naki silper ganer sure sur miliye gaibo " priyar moner kotha bidata janena ki kore
bolo ami jani.jake ami ato din ful bebe jenece sei buje zoralo cokher pani hai......
"Priya"
Tumi zorna jobon sroter moto.jibon srote tumi je colco ta noi.tomar colar songge songe tomar bola songsarer jesob
kothin ocol pathor gulor upor diye colo tara o toamr songgater sure beje ute.tai kobir vasai bolte hoi...
amar cayate tomar hasite
milito chobi...
tai niye aji porsan amar
metece sur o chobi
pode pode tobo alor oloke
vasha ane prane poloke poloke
mor bani rup dekhilam aji
nirzarini....
tomar probahe moner jaigai
nijeke cini....
"Priya"
ami ceyecilam amar hridoyer supto abas tuku niye tomar jobon mohonate dube takte.kintu amar son eccar birudde bidatar
bider likhon neme alo 1 sorbonasi bedonar jhor.sahitte valobasar boi jotoi porece totoi ai kothata bar bar amar mone
hoyece "" valobasar tragedi gote sei khane, jekhane porospor sotonto jene manus sontusto takte pare"".nijer ecca onner
ecca korbar jonno jekhane janalam sekhane mone kori apon moner moto kore bodliye onek kicu sriosti korbo.bagger ki
nirmom porihas amar sob asha shopnoi theke jai.bastobotai ta puron korte parina.moner basona cilo.hariyece onek ar
harate caina.pete cai apon kore....
"Priya"
asole tomake ki bolbo tomar dos diye nijeke coto korte caina.tahole nijeke sarthopor mone hobe.karon tomar moto nari je
teg shikar koreco ta ciro baskor monalisa.tomader moto kicu nari ace jara nari namer mukhusdari.tobuo nil sagorer pare
rupali chad ar ojocro tarar melar majeo tomar kotha mone pore.digonter upor diye ure asa uttal batas jeno amar kane kane
tomaroi kotha bole jai.onek opoman niribe sozzo korece tomake pawyer jonno kintu ar noi.tumi janona amar obontorin gotona
timi amar valobasar rup dekheco kintu protisoder corom sekha dekhoni.1 matro tomar jonno ajo nirob hoye ace.tobe jar
jonno amar valobasa lohito sagore dube jacce.tar jonno "SUKH" sobdoto jobon theke zore jabe a amar protgga...
"Priya"
tumar kotha moto tomake bulte cesta kori kintu keno janina tomar sriti gulo amake badha dei.janina tumi kemon aco? tobuo
ami asha kori tumi valo aco.tumi sukhe aco sunle je ami hazar bedonar majeo anondo pai.priya bebe dekhoto prem ja diyece
tar ceye bese kere niyece.aj ami soto alor maje takleo tomake haranor betai amar sob kicu ondokar hoye jai.priya amar
jibone sukher ceye dukher boza onek bese.tumi amar jiboner alor prodip nibiye diye ondokare toliye dile.aj amar jobone
alo nei ace sudu omabossar moto ondokar....
"Priya"
sob pakhi gore pire sobari je ace thikana.aj ami boro aka,cena poth holo ocena.kicu kicu ful fute gondho biliye dite ar
kicu ful fute okale zore jete.ami na hoi okale zore gelam.TUMI SUKHE THEKO.aj ami 1tai parthona kore.dukkho daw jodi tumi
daw probhu sokti diyo sohibar,noyoter kosagate amar ai mon take keno tumi bago bar bar......
"Priya"
tumi sundor,sundor akash batah pahar somudro sobuj bonani gera prokiti sundor.ar sob ceye sundor bece thaka.tobuo ki ajibon
bece thaka jai ? bidayer sana baje.niye jabar palki ase darai duyare.sundor ai prithebe cere cole jete hoi sobaike...
hotat deke ute nam na jana pakhe ojante comke jibon puralo naki ???
"IF YOU FORGET ME BUT DID NOT FORGET THE MEMORY OF OUR LOVES"
"""MASUM"""
masumbhuiyan0@gmail.com
কপোতাক্ষ নদ.....মাইকেল মধুসূদন দত্ত
সতত, হে নদ তুমি পড় মোর মনে
সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে।
সতত যেমনি লোক নিশার স্বপনে
শোনে মায়া যন্ত্র ধ্বনি তব কলকলে
জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে।
বহু দেশ দেখিয়াছি বহু নদ দলে
কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মেটে কার জলে
দুগ্ধস্রোতরূপি তুমি মাতৃভূমি স্তনে।
আর কি হে হবে দেখা যত দিন যাবে
প্রজারূপে রাজরূপ সাগরেরে দিতে
বারি রূপ কর তুমি এ মিনতি গাবে
বঙ্গজ জনের কানে সখে-সখারিতে।
নাম তার এ প্রবাসে মজি প্রেমভাবে
লইছে যে নাম তব বঙ্গের সঙ্গীতে।

সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে।
সতত যেমনি লোক নিশার স্বপনে
শোনে মায়া যন্ত্র ধ্বনি তব কলকলে
জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে।
বহু দেশ দেখিয়াছি বহু নদ দলে
কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মেটে কার জলে
দুগ্ধস্রোতরূপি তুমি মাতৃভূমি স্তনে।
আর কি হে হবে দেখা যত দিন যাবে
প্রজারূপে রাজরূপ সাগরেরে দিতে
বারি রূপ কর তুমি এ মিনতি গাবে
বঙ্গজ জনের কানে সখে-সখারিতে।
নাম তার এ প্রবাসে মজি প্রেমভাবে
লইছে যে নাম তব বঙ্গের সঙ্গীতে।

''''হিরনবালা''''
হিরনবালা তোমার কাছে দারুন ঋণী সারা জীবন
যেমন ঋণী আব্বা এবং মায়ের কাছে।
ফুলের কাছে মৌমাছিরা
বায়ুর কাছে নদীর বুকে জলের খেলা যেমন ঋণী
খোদার কসম হিরনবালা
তোমার কাছে আমিও ঠিক তেমন ঋণী।
তোমার বুকে বুক রেখেছি বলেই আমি পবিত্র আজ
তোমার জলে স্নান করেছি বলেই আমি বিশুদ্ধ আজ
যৌবনে ঐ তৃষ্ণা কাতর লকলকে জিভ
এক নিশীথে কুসুম গরম তোমার মুখে
কিছু সময় ছিল বলেই সভ্য হলো
মোহান্ধ মন এবং জীবন মুক্তি পেলো।
আঙুল দিয়ে তোমার আঙুল ছুঁয়েছিলাম বলেই আমার
আঙুলে আজ সুর এসেছে,
নারী-খেলার অভিজ্ঞতার প্রথম এবং পবিত্র ঋণ
তোমাকে নিয়ে কবিতা লিখে সত্যি কি আর শোধ হয়েছে?
যেমন ঋণী আব্বা এবং মায়ের কাছে।
ফুলের কাছে মৌমাছিরা
বায়ুর কাছে নদীর বুকে জলের খেলা যেমন ঋণী
খোদার কসম হিরনবালা
তোমার কাছে আমিও ঠিক তেমন ঋণী।
তোমার বুকে বুক রেখেছি বলেই আমি পবিত্র আজ
তোমার জলে স্নান করেছি বলেই আমি বিশুদ্ধ আজ
যৌবনে ঐ তৃষ্ণা কাতর লকলকে জিভ
এক নিশীথে কুসুম গরম তোমার মুখে
কিছু সময় ছিল বলেই সভ্য হলো
মোহান্ধ মন এবং জীবন মুক্তি পেলো।
আঙুল দিয়ে তোমার আঙুল ছুঁয়েছিলাম বলেই আমার
আঙুলে আজ সুর এসেছে,
নারী-খেলার অভিজ্ঞতার প্রথম এবং পবিত্র ঋণ
তোমাকে নিয়ে কবিতা লিখে সত্যি কি আর শোধ হয়েছে?
'''আমরা কিভাবে ইসলাম মানবো'''
আমরা যারা কোন ফর্ম পূরণের সময় ধর্মের ঘরে “ইসলাম” লিখি তারা স্কুলে পড়াশোনার সময় বিষয় হিসেবে ইসলামিয়াত নামে একটি নির্বিষ বিষয় পড়তাম। নির্বিষতার মাহাত্ম্য - SSC তে এ বিষয়ের মাত্র ১০টা প্রশ্ন পড়েই এ+ বা লেটার পাওয়া যায়, আগের ক্লাসগুলোর কথা আর নাই বা বললাম। আসলে, দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমাদের অনেকেরই বাবা-মা ছোটবেলা থেকে বুঝিয়েছেন যা পড়লে রেজাল্ট ভাল হবে তাই হল কাজের পড়াশোনা আর বাকিটা অকাজের। ১০ পৃষ্ঠা পড়লে যেখানে চলে, কোন পাগল বাকি ৯০ পৃষ্ঠা পড়বে? আর জানার জন্য পড়ার তো প্রশ্নই উঠে না। ফলে ইসলামিয়াতের আবরণ ভেদ করে কখনো আমাদের মনের মধ্যে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা প্রবেশ করতে পারেনি। তো এহেন গুণধরেরা যখন কোন এক মানসিক দুর্বলতার মুহূর্তে বাপদাদার ধর্ম ইসলাম মানার চেষ্টা করে তখন প্রথম বাঁধাটা আসে জানার ক্ষেত্রে। শূণ্য জ্ঞানের পাত্র নিয়ে তখন আমরা বই/ওয়েবসাইট হাতড়াই। এর ফলাফল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যা হয় তা হল, অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী। কিছু ভাসা ভাসা পড়াশোনা করে আমাদের এই ধারণা জন্মে যায় যে আমরা ইসলাম সম্পর্কে অনেক জানি-বুঝি। আর আমাদের দেশের ফতোয়া দেয়া কাঠমোল্লা, মিলাদজীবি হুজুর আর মুরিদচোষা পীরদের আধিক্যে আমাদের একটা বিরাট ক্ষতি হয়ে গিয়েছে - তা হল আমরা পুরো আলিমজাতির উপর একটা বিরূপ ধারণা পোষণ করে চলি। এই জন্য ইসলাম সম্পর্কে জানতে গিয়ে আমরা মনে করি ইসলাম বুঝার জন্য অন্য কারো দরকার নাই, আমরা যা বুঝি তাই চূড়ান্ত।
কিন্তু আসলে কি এভাবে ইসলাম চলে? না। চলে না।
তবে জেনে নেই কিভাবে ইসলাম শিখা এবং মানা উচিত।
ইসলাম শিক্ষাটা একটা সিলসিলার মত ব্যাপার, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা বুঝেছেন, তাঁকে দেখে সাহাবিরা যা বুঝেছেন, তাবেয়িরা যা বুঝেছেন সেটাই কিন্তু ইসলাম। রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর উপর ২৩ বছর ধরে কোরআন নাযিল করা হল যাতে তিনি কোরআনের আদেশ নিষেধ নিজের জীবনে প্রতিফলন করে দেখান। আবার তিনি যা বুঝলেন এবং প্রচার করলেন তাই কিন্তু সাহাবিদের জীবনে প্রতিফলিত হল। তাই কোরআন তাফসির এর মূলনীতি বর্ণনা করতে গিয়ে ইবনে কাসির তার আল তাফসির আল কোরআন আল আজিম - এর ভূমিকায় লিখলেন -
ক্বুরানের ব্যখ্যা হবে নিম্নোক্ত ধারাবাহিকতায়, একটা না পেলে তবেই এর পরেরটায় যাওয়া যাবে -
১। ক্বুরানের ব্যখ্যা কোরআন দ্বারা। ২। ক্বুরানের ব্যখ্যা রসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বাণী/আদেশ/নিষেধ দ্বারা। ৩। ক্বুরানের ব্যখ্যা রসুলুল্লাহ (সাঃ)এর সাহাবিদের দ্বারা। ৪। ক্বুরানের ব্যখ্যা রসুলুল্লাহ (সাঃ)এর সাহাবিদের তাবেয়িদের দ্বারা। ৫। ক্বুরানের ব্যখ্যা রসুলুল্লাহ (সাঃ)এর তাবেয়িদের তাবেয়িনদের দ্বারা। ৬। ক্বুরানের ব্যখ্যা ক্বুরানের সাতটি ক্বিরাতের দ্বারা। ৭। আরবি ভাষার জ্ঞান দ্বারা।
যিনি শুধু কোরআন পড়লেন (তাও মূল আরবি না, শুধু অনুবাদ) কিন্তু বাকিগুলো সম্পর্কে জ্ঞান রাখলেন না, তিনি যখন কোরআন পড়তে গিয়ে কোন কিছু না বুঝবেন তখন তার সেই “নলেজ গ্যাপ” এর জন্য নিজের মত করে (বেশিভাগ ক্ষেত্রেই শয়তানের মত করে) তার একটা ব্যাখ্যা দাড়া করিয়ে নিবেন। এর উদাহরণ আমাদেরই অনেক ভাই যাদের ধারণা শুধুমাত্র কোরআন মানাটাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। তাদের বক্তব্য, যেহেতু আল্লাহ কোরআন সংরক্ষণ করবেন বলেছেন সেহেতু কোরআন সংরক্ষিত আছে। যেহেতু হাদিস সরাসরি আল্লাহর বাণী নয় তাই তা বিকৃত হয়ে গেছে এবং এগুলো মানা যাবে না। যদিও বা মানতে হয় তবে চিন্তা ভাবনা করে বিবেক বুদ্ধি খাটিয়ে সেগুলো মানা যেতে পারে। এখানে মূল সমস্যা হল খন্ডিত জ্ঞান। কেউ যদি কোন হাদিসের ভাষ্য বা Text জানেন কিন্তু তার ব্যাখ্যা না জানেন তবে তিনি ব্যাখ্যা না করতে পেরে ধারণা করবেন যেহেতু এটা হাদিস তাই এতে ভুল আছে।
আবার ব্যাপারটি এরকমও হতে পারে যে, কোন একটি বিষয় সম্পর্কে কেউ যদি একটি হাদিস জানেন এবং সেটা থেকে নিজে নিজে কোন সিদ্ধান্তে আসেন তবে সেটা বিভ্রান্তিকর হতে পারে।
যেমন অপ্রাপ্তবয়ষ্ক শিশুসন্তানেরা আখিরাতে কি পরিণতি লাভ করবে?
প্রথম হাদিসঃ অপ্রাপ্তবয়ষ্কদের রসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মিরাজের সময় ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) এর সাথে জান্নাতে একটি গাছের কাছে থাকতে দেখেছিলেন।
দ্বিতীয় হাদিসঃ খাদিজা (রাঃ) রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে তাঁর জাহিলিয়াতের সময়কার মৃত সন্তানদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করায় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছিলেন যে তাঁরা জাহান্নামী।
যারা প্রথমটি জানেন তারা অপ্রাপ্তবয়ষ্করা কি পরিণতি লাভ করবে - এর উত্তর দিবেন জান্নাত, যারা দ্বিতীয়টি জানেন তাঁরা বলবেন জাহান্নাম। যিনি প্রথম হাদিসটি জানেন তিনি ইসলামের খন্ডিত জ্ঞানের অধিকারী। যিনি শুধু দ্বিতীয় হাদিসটি পড়লেন তিনি বিবেক দিয়ে বিশ্লেষণ করে বলবেন এটা আবার কেমন বিচার? যে শিশু কোন পাপ করেনি সে কেন আগুনে পুড়বে? যারা দুইটাই জানেন তাদের মনে শয়তান বিভ্রান্তি ঢুকায়ে বলবে দেখেছ রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কথা স্ববিরোধী, সুতরাং হাদিস মানার দরকার নাই।
তৃতীয় হাদিসঃ আনাস(রাঃ) বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন কিয়ামাতের দিন অপ্রাপ্তবয়ষ্ক, পাগল এবং যারা দুই নবীর মাঝখানে এসেছে (আহ্লুল ফাতরাহ) তারা পরীক্ষিত হবেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন দূত এসে তাদের আল্লাহর নির্দেশে আগুনে ঝাঁপ দিতে বলবেন - যারা এই আদেশ মানবে তাঁরা জান্নাতে যাবে, যারা অগ্রাহ্য করবে তারা জাহান্নামী।
যিনি তৃতীয় হাদিসটিও জানেন তিনি কিন্তু প্রশ্নটির একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। ইসলাম টোটালারিয়ান ভিউ সাপোর্ট করে, ফ্র্যাগমেন্টেড ভিউ না। যেমন একজন মানুষ একটি জানালা দিয়ে একটি রাস্তার কিছু অংশ দেখল যেখানে শুধু কাপড়ের দোকান আছে। এখন সে যদি দাবি করে ঐ রাস্তায় শুধু কাপড়ের দোকান আছে তা ঠিক কিন্তু সম্পুর্ণ ঠিক না। সে যদি ছাদে দাঁড়িয়ে ঐ রাস্তাটি দেখে তবে সে দেখতে পেত কাপড়ের দোকান ছাড়াও আরো অনেক কিছুই ঐ রাস্তায় আছে। জানালার দৃশ্যটি ফ্র্যাগমেন্টেড ভিউ কিন্তু ছাদের দৃশ্য টোটালারিয়ান ভিউ। এমনটি শুধু ইসলাম নয় অনেক অন্য ক্ষেত্রেও একই ভাবে কাজ করে। আমরা জিনোমিক্স নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে দেখেছি আগে যেখানে একটা জিন-এর কাজ নিয়ে গবেষণা হত; এখন হয় পুরো কোষের সব জিন নিয়ে। কারণ ঐ জিনের কাজ পুরো কোষের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায়ই বদলে যায়। ঠিক তেমনি অনেক আয়াত বা হাদিস অন্যান্য সব আয়াত ও হাদিসের সাহায্যে পুরো অর্থ নেয়, একাকি ভিন্ন অর্থ নেয়। পুরো অর্থ মানে রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তাঁর সাহাবিরা যে অর্থে নিয়েছিলেন এবং জীবনে আমল করেছিলেন সেই অর্থ।
বড় আলিমের সুবিধাটা হল এখানে যে তিনি একটি বিষয় সম্পর্কে সব আয়াত এবং তার সম্পর্কিত হাদিসগুলো জানেন তাই তিনি একটা আয়াত বা একটি বিষয় ব্যাখ্যার সময় আমাদের থেকে ভাল ব্যাখ্যা করতে পারেন। তিনি যদি না জেনেও থাকেন তবে জানার চেষ্টা করে তবেই ব্যাখ্যা করবেন তার আগে করবেন না। আমি যদি সম্পূর্ণ জ্ঞান ছাড়াই আয়াতের অন্তর্নিহিত মানে বুঝতে যাই বা কোন বিষয় ব্যাখ্যা করতে যাই তাহলে সমস্যা
হবে। আমার জ্ঞানের অভাবে আমি ভুল ব্যখ্যা করব, কিন্তু শয়তান আমাকে বুঝাবে যে ঐ অশিক্ষিত আলিমের থেকে আমিই ভাল জানি, বুঝি এবং আমার ভুল ব্যাখ্যা নিয়ে আমি তর্ক করব এবং ভুল পথে চলে যাব (নাউযুবিল্লাহ)।
কোন বিষয়ের কোন ব্যাখ্যা বড় কোন আলিম করেছেন, অন্য আলিমরা তাদের এই ব্যাখ্যাকে ঠিক বলেছেন তাদের পরিপূর্ণ জ্ঞানের পরিপ্রেক্ষিতে, তারপরেই আমাদের উচিত সেটা মেনে নেয়া ও প্রচার করা। যে কেউ ইসলাম নিয়ে সিস্টেমেটিকালি পড়াশোনা করুক, এরপর কোরআন-হাদিসের ব্যাখ্যা করুক, সেই ব্যাখ্যা বড় আলিমরা মেনে নিক, আল্লাহর কসম ঐটা মেনে নিতে আমার কোন আপত্তি নাই। কেউ একজন সারাজীবন ফ্লুইড মেকানিক্স পড়ল, পড়াল, রিটায়ার করে যখন দেখল আর কোন কাজ নাই, তখন ইসলামি ফাউন্ডেশন বা আব্দুল্লাহ ইউসুফ আলির অনুবাদ পড়ে আমাকে বুঝাবে যে হাদিস দরকার নাই, কোরআনেই সব আছে তাহলে আমি এই লোকের ধারেকাছে নাই। ইসলাম পুরাটা না বুঝে খন্ডিত বুঝ নিয়ে অনেক মানুষ নিজে বিভ্রান্ত হয়, অন্যদের বিভ্রান্ত করে ও সমস্ত মুসলিমদের বিপদে ফেলে। বিন লাদেনের জিহাদের আয়াতের ব্যাখ্যার চোটে আফগানিস্তান আর ইরাক এক সাথে কাত হয়ে গেছে! হতে পারে উনার সন্ত্রাসকে বেছে নেয়ার কারণ আল্লাহকে খুশি করা, কিন্তু বিন বাযের মত আলিম কে কাফির ঘোষণা দিয়ে তাদের পরামর্শ না শুনে, নিজের ভার্সনের জিহাদ করে তিনি মুসলিম উম্মাহর অপরিমাণ ক্ষতি করেছেন। আল্লাহর রসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সুন্নাত উপেক্ষা করায় এইকাজের জন্য তিনি পাপ কামাই করেছেন, পূণ্য না।
আমরা অন্তত ইসলামের ক্ষেত্রে নিজেদেরকে অতি গুরুত্ব না দিয়ে বড়মাপের আলিমদের মতামতটা জেনে নিব, তারপরে সেটা নিয়ে কথা বলব। তাদের মধ্যে মতের ভেদাভেদ থাকলে আমরা উভয় মত সম্পর্কে পড়ব, চিন্তা করব তারপর যেটা পছন্দ হবে (জীবনযাত্রার সুবিধার্থে না, ইসলাম মানার ক্ষেত্রে যেটা বেশি তাকওয়াপূর্ণ, ও দলিল নির্ভর) সেটা মেনে নিব। যার মত মেনে নিলাম না তাকে হেয় করব না বরং সম্মান করব। আমরা মনে রাখব আলিমরাই রসুলদের উত্তরাধিকারী। সবচেয়ে ভাল হয় আমরা নিজেরা নিয়মানুযায়ী পড়াশোনা করে আলিম হয়ে যাই। ইসলামিক অনলাইন ইউনিভার্সিটি তে অনলাইনে পড়াশোনা করা যায় এমনকি সার্টিফিকেট পর্যন্ত নেয়া যায়। যারা জানার উদ্দেশ্যে জানতে চান তারা আরববিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষিত আলিম যারা বর্তমানে আমাদের দেশে অবস্থান করছেন তাদের কাছে ফর্মাল ক্লাসের আয়োজন করতে পারেন, এতে নিজের শিক্ষা হল, আরো মানুষ দ্বীন শিখতে পারল।
“ইসলাম একটা সিম্পল, সহজ ধর্ম” - এ কথা বলে যার যা করতে ভাল লাগে সব ইসলামের মধ্যে ঢুকাবে, এটা খুব বড় ধরণের অন্যায়। আমার নিজের কাছে যে ইসলাম মানতে ভাল লাগে তা মানলে আর আল্লাহর ইসলামের দরকার কি ছিল? আমরা ইসলাম মানি আল্লাহকে খুশি করে পুরষ্কার পেতে, তাঁর শাস্তি থেকে বাঁচতে। এই উদ্দেশ্য সফল করতে আল্লাহ আমাদের জন্য যেই ইসলাম পছন্দ করেছেন ঠিক সেটাই মেনে চলতে হবে।
আল্লাহ আমাদের আপন আত্মার ঔদ্ধত্য থেকে রক্ষা করুন, তাঁর আদেশ ঠিক মত জেনে তা মেনে নেয়ার তৌফিক দিন। আমিন।
সমাপ্ত
কিন্তু আসলে কি এভাবে ইসলাম চলে? না। চলে না।
তবে জেনে নেই কিভাবে ইসলাম শিখা এবং মানা উচিত।
ইসলাম শিক্ষাটা একটা সিলসিলার মত ব্যাপার, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা বুঝেছেন, তাঁকে দেখে সাহাবিরা যা বুঝেছেন, তাবেয়িরা যা বুঝেছেন সেটাই কিন্তু ইসলাম। রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর উপর ২৩ বছর ধরে কোরআন নাযিল করা হল যাতে তিনি কোরআনের আদেশ নিষেধ নিজের জীবনে প্রতিফলন করে দেখান। আবার তিনি যা বুঝলেন এবং প্রচার করলেন তাই কিন্তু সাহাবিদের জীবনে প্রতিফলিত হল। তাই কোরআন তাফসির এর মূলনীতি বর্ণনা করতে গিয়ে ইবনে কাসির তার আল তাফসির আল কোরআন আল আজিম - এর ভূমিকায় লিখলেন -
ক্বুরানের ব্যখ্যা হবে নিম্নোক্ত ধারাবাহিকতায়, একটা না পেলে তবেই এর পরেরটায় যাওয়া যাবে -
১। ক্বুরানের ব্যখ্যা কোরআন দ্বারা। ২। ক্বুরানের ব্যখ্যা রসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বাণী/আদেশ/নিষেধ দ্বারা। ৩। ক্বুরানের ব্যখ্যা রসুলুল্লাহ (সাঃ)এর সাহাবিদের দ্বারা। ৪। ক্বুরানের ব্যখ্যা রসুলুল্লাহ (সাঃ)এর সাহাবিদের তাবেয়িদের দ্বারা। ৫। ক্বুরানের ব্যখ্যা রসুলুল্লাহ (সাঃ)এর তাবেয়িদের তাবেয়িনদের দ্বারা। ৬। ক্বুরানের ব্যখ্যা ক্বুরানের সাতটি ক্বিরাতের দ্বারা। ৭। আরবি ভাষার জ্ঞান দ্বারা।
যিনি শুধু কোরআন পড়লেন (তাও মূল আরবি না, শুধু অনুবাদ) কিন্তু বাকিগুলো সম্পর্কে জ্ঞান রাখলেন না, তিনি যখন কোরআন পড়তে গিয়ে কোন কিছু না বুঝবেন তখন তার সেই “নলেজ গ্যাপ” এর জন্য নিজের মত করে (বেশিভাগ ক্ষেত্রেই শয়তানের মত করে) তার একটা ব্যাখ্যা দাড়া করিয়ে নিবেন। এর উদাহরণ আমাদেরই অনেক ভাই যাদের ধারণা শুধুমাত্র কোরআন মানাটাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। তাদের বক্তব্য, যেহেতু আল্লাহ কোরআন সংরক্ষণ করবেন বলেছেন সেহেতু কোরআন সংরক্ষিত আছে। যেহেতু হাদিস সরাসরি আল্লাহর বাণী নয় তাই তা বিকৃত হয়ে গেছে এবং এগুলো মানা যাবে না। যদিও বা মানতে হয় তবে চিন্তা ভাবনা করে বিবেক বুদ্ধি খাটিয়ে সেগুলো মানা যেতে পারে। এখানে মূল সমস্যা হল খন্ডিত জ্ঞান। কেউ যদি কোন হাদিসের ভাষ্য বা Text জানেন কিন্তু তার ব্যাখ্যা না জানেন তবে তিনি ব্যাখ্যা না করতে পেরে ধারণা করবেন যেহেতু এটা হাদিস তাই এতে ভুল আছে।
আবার ব্যাপারটি এরকমও হতে পারে যে, কোন একটি বিষয় সম্পর্কে কেউ যদি একটি হাদিস জানেন এবং সেটা থেকে নিজে নিজে কোন সিদ্ধান্তে আসেন তবে সেটা বিভ্রান্তিকর হতে পারে।
যেমন অপ্রাপ্তবয়ষ্ক শিশুসন্তানেরা আখিরাতে কি পরিণতি লাভ করবে?
প্রথম হাদিসঃ অপ্রাপ্তবয়ষ্কদের রসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মিরাজের সময় ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) এর সাথে জান্নাতে একটি গাছের কাছে থাকতে দেখেছিলেন।
দ্বিতীয় হাদিসঃ খাদিজা (রাঃ) রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে তাঁর জাহিলিয়াতের সময়কার মৃত সন্তানদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করায় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছিলেন যে তাঁরা জাহান্নামী।
যারা প্রথমটি জানেন তারা অপ্রাপ্তবয়ষ্করা কি পরিণতি লাভ করবে - এর উত্তর দিবেন জান্নাত, যারা দ্বিতীয়টি জানেন তাঁরা বলবেন জাহান্নাম। যিনি প্রথম হাদিসটি জানেন তিনি ইসলামের খন্ডিত জ্ঞানের অধিকারী। যিনি শুধু দ্বিতীয় হাদিসটি পড়লেন তিনি বিবেক দিয়ে বিশ্লেষণ করে বলবেন এটা আবার কেমন বিচার? যে শিশু কোন পাপ করেনি সে কেন আগুনে পুড়বে? যারা দুইটাই জানেন তাদের মনে শয়তান বিভ্রান্তি ঢুকায়ে বলবে দেখেছ রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কথা স্ববিরোধী, সুতরাং হাদিস মানার দরকার নাই।
তৃতীয় হাদিসঃ আনাস(রাঃ) বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন কিয়ামাতের দিন অপ্রাপ্তবয়ষ্ক, পাগল এবং যারা দুই নবীর মাঝখানে এসেছে (আহ্লুল ফাতরাহ) তারা পরীক্ষিত হবেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন দূত এসে তাদের আল্লাহর নির্দেশে আগুনে ঝাঁপ দিতে বলবেন - যারা এই আদেশ মানবে তাঁরা জান্নাতে যাবে, যারা অগ্রাহ্য করবে তারা জাহান্নামী।
যিনি তৃতীয় হাদিসটিও জানেন তিনি কিন্তু প্রশ্নটির একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। ইসলাম টোটালারিয়ান ভিউ সাপোর্ট করে, ফ্র্যাগমেন্টেড ভিউ না। যেমন একজন মানুষ একটি জানালা দিয়ে একটি রাস্তার কিছু অংশ দেখল যেখানে শুধু কাপড়ের দোকান আছে। এখন সে যদি দাবি করে ঐ রাস্তায় শুধু কাপড়ের দোকান আছে তা ঠিক কিন্তু সম্পুর্ণ ঠিক না। সে যদি ছাদে দাঁড়িয়ে ঐ রাস্তাটি দেখে তবে সে দেখতে পেত কাপড়ের দোকান ছাড়াও আরো অনেক কিছুই ঐ রাস্তায় আছে। জানালার দৃশ্যটি ফ্র্যাগমেন্টেড ভিউ কিন্তু ছাদের দৃশ্য টোটালারিয়ান ভিউ। এমনটি শুধু ইসলাম নয় অনেক অন্য ক্ষেত্রেও একই ভাবে কাজ করে। আমরা জিনোমিক্স নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে দেখেছি আগে যেখানে একটা জিন-এর কাজ নিয়ে গবেষণা হত; এখন হয় পুরো কোষের সব জিন নিয়ে। কারণ ঐ জিনের কাজ পুরো কোষের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায়ই বদলে যায়। ঠিক তেমনি অনেক আয়াত বা হাদিস অন্যান্য সব আয়াত ও হাদিসের সাহায্যে পুরো অর্থ নেয়, একাকি ভিন্ন অর্থ নেয়। পুরো অর্থ মানে রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তাঁর সাহাবিরা যে অর্থে নিয়েছিলেন এবং জীবনে আমল করেছিলেন সেই অর্থ।
বড় আলিমের সুবিধাটা হল এখানে যে তিনি একটি বিষয় সম্পর্কে সব আয়াত এবং তার সম্পর্কিত হাদিসগুলো জানেন তাই তিনি একটা আয়াত বা একটি বিষয় ব্যাখ্যার সময় আমাদের থেকে ভাল ব্যাখ্যা করতে পারেন। তিনি যদি না জেনেও থাকেন তবে জানার চেষ্টা করে তবেই ব্যাখ্যা করবেন তার আগে করবেন না। আমি যদি সম্পূর্ণ জ্ঞান ছাড়াই আয়াতের অন্তর্নিহিত মানে বুঝতে যাই বা কোন বিষয় ব্যাখ্যা করতে যাই তাহলে সমস্যা
হবে। আমার জ্ঞানের অভাবে আমি ভুল ব্যখ্যা করব, কিন্তু শয়তান আমাকে বুঝাবে যে ঐ অশিক্ষিত আলিমের থেকে আমিই ভাল জানি, বুঝি এবং আমার ভুল ব্যাখ্যা নিয়ে আমি তর্ক করব এবং ভুল পথে চলে যাব (নাউযুবিল্লাহ)।
কোন বিষয়ের কোন ব্যাখ্যা বড় কোন আলিম করেছেন, অন্য আলিমরা তাদের এই ব্যাখ্যাকে ঠিক বলেছেন তাদের পরিপূর্ণ জ্ঞানের পরিপ্রেক্ষিতে, তারপরেই আমাদের উচিত সেটা মেনে নেয়া ও প্রচার করা। যে কেউ ইসলাম নিয়ে সিস্টেমেটিকালি পড়াশোনা করুক, এরপর কোরআন-হাদিসের ব্যাখ্যা করুক, সেই ব্যাখ্যা বড় আলিমরা মেনে নিক, আল্লাহর কসম ঐটা মেনে নিতে আমার কোন আপত্তি নাই। কেউ একজন সারাজীবন ফ্লুইড মেকানিক্স পড়ল, পড়াল, রিটায়ার করে যখন দেখল আর কোন কাজ নাই, তখন ইসলামি ফাউন্ডেশন বা আব্দুল্লাহ ইউসুফ আলির অনুবাদ পড়ে আমাকে বুঝাবে যে হাদিস দরকার নাই, কোরআনেই সব আছে তাহলে আমি এই লোকের ধারেকাছে নাই। ইসলাম পুরাটা না বুঝে খন্ডিত বুঝ নিয়ে অনেক মানুষ নিজে বিভ্রান্ত হয়, অন্যদের বিভ্রান্ত করে ও সমস্ত মুসলিমদের বিপদে ফেলে। বিন লাদেনের জিহাদের আয়াতের ব্যাখ্যার চোটে আফগানিস্তান আর ইরাক এক সাথে কাত হয়ে গেছে! হতে পারে উনার সন্ত্রাসকে বেছে নেয়ার কারণ আল্লাহকে খুশি করা, কিন্তু বিন বাযের মত আলিম কে কাফির ঘোষণা দিয়ে তাদের পরামর্শ না শুনে, নিজের ভার্সনের জিহাদ করে তিনি মুসলিম উম্মাহর অপরিমাণ ক্ষতি করেছেন। আল্লাহর রসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সুন্নাত উপেক্ষা করায় এইকাজের জন্য তিনি পাপ কামাই করেছেন, পূণ্য না।
আমরা অন্তত ইসলামের ক্ষেত্রে নিজেদেরকে অতি গুরুত্ব না দিয়ে বড়মাপের আলিমদের মতামতটা জেনে নিব, তারপরে সেটা নিয়ে কথা বলব। তাদের মধ্যে মতের ভেদাভেদ থাকলে আমরা উভয় মত সম্পর্কে পড়ব, চিন্তা করব তারপর যেটা পছন্দ হবে (জীবনযাত্রার সুবিধার্থে না, ইসলাম মানার ক্ষেত্রে যেটা বেশি তাকওয়াপূর্ণ, ও দলিল নির্ভর) সেটা মেনে নিব। যার মত মেনে নিলাম না তাকে হেয় করব না বরং সম্মান করব। আমরা মনে রাখব আলিমরাই রসুলদের উত্তরাধিকারী। সবচেয়ে ভাল হয় আমরা নিজেরা নিয়মানুযায়ী পড়াশোনা করে আলিম হয়ে যাই। ইসলামিক অনলাইন ইউনিভার্সিটি তে অনলাইনে পড়াশোনা করা যায় এমনকি সার্টিফিকেট পর্যন্ত নেয়া যায়। যারা জানার উদ্দেশ্যে জানতে চান তারা আরববিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষিত আলিম যারা বর্তমানে আমাদের দেশে অবস্থান করছেন তাদের কাছে ফর্মাল ক্লাসের আয়োজন করতে পারেন, এতে নিজের শিক্ষা হল, আরো মানুষ দ্বীন শিখতে পারল।
“ইসলাম একটা সিম্পল, সহজ ধর্ম” - এ কথা বলে যার যা করতে ভাল লাগে সব ইসলামের মধ্যে ঢুকাবে, এটা খুব বড় ধরণের অন্যায়। আমার নিজের কাছে যে ইসলাম মানতে ভাল লাগে তা মানলে আর আল্লাহর ইসলামের দরকার কি ছিল? আমরা ইসলাম মানি আল্লাহকে খুশি করে পুরষ্কার পেতে, তাঁর শাস্তি থেকে বাঁচতে। এই উদ্দেশ্য সফল করতে আল্লাহ আমাদের জন্য যেই ইসলাম পছন্দ করেছেন ঠিক সেটাই মেনে চলতে হবে।
আল্লাহ আমাদের আপন আত্মার ঔদ্ধত্য থেকে রক্ষা করুন, তাঁর আদেশ ঠিক মত জেনে তা মেনে নেয়ার তৌফিক দিন। আমিন।
সমাপ্ত
কোরআন কি আল্লাহর বাণী?
প্রত্যেক ধর্মে বিশ্বাসীরাই যেহেতু এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে বিশ্বাস করে সেহেতু এটি একটি কমন বিশ্বাস। অধিকন্তু, এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের স্বপক্ষে ইতোমধ্যে 'তিনটি স্বতন্ত্র প্রমাণ' উপস্থাপন করা হয়েছে। ফলে “সৃষ্টিকর্তা আছেন” ধরে নিয়ে যৌক্তিক ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে এই লেখাটিকে বিবেচনা করতে হবে। একটি গ্রন্থ এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার বাণী বা রেভিলেশন কি-না- সেটা বিবেচনায় নেয়ার আগে নিদেনপক্ষে দুটি শর্ত পূরণ করতেই হবে:
শর্ত-১: গ্রন্থটিকে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার বাণী বলে দাবি করতে হবে। অর্থাৎ গ্রন্থটি যে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার বাণী- সেটা গ্রন্থের মধ্যে সুস্পষ্টভাবে লিখা থাকতে হবে। দাবি করাটা কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে গ্রন্থকে সৃষ্টিকর্তার বাণী বলে দাবিই করা হয়নি সেই গ্রন্থকে আবার সৃষ্টিকর্তার বাণী হিসেবে বিশ্বাস করাটাই তো বোকামি। আগে তো দাবি করতে হবে- তারপরই না কেবল দাবিটা সত্য নাকি মিথ্যা এবং সেই সাথে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্ন আসবে।
শর্ত-২: গ্রন্থটিকে ভুল-ভ্রান্তি ও অসঙ্গতি থেকে মুক্ত হতে হবে। একটি গ্রন্থকে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার বাণী বলে দাবি করার পরও যদি তার মধ্যে সুস্পষ্ট ভুল-ভ্রান্তি বা অসঙ্গতি থাকে সেক্ষেত্রে সেই গ্রন্থটি স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।
এই দুটি শর্ত পূরণ করার পরই কেবল একটি গ্রন্থ এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার বাণী কি-না- বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখা যেতে পারে। নিদেনপক্ষে শর্ত-১ পূরণ করতেই হবে। কারণ শর্ত-১ পূরণ করতে না পারলে সেই গ্রন্থ নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রশ্নই আসে না।
ইসলামে বিশ্বাসীদের যদি জিজ্ঞেস করা হয় তারা কেন কোরআনে বিশ্বাস করে- অর্থাৎ তাদের বিশ্বাসের ভিত্তি কী? একেক জন হয়তো একেক ভাবে উত্তর দেবেন। তবে মোটামুটিভাবে নিম্নের যুক্তিগুলো চলে আসবে। কোরআন যে কোন মানুষের নিজস্ব বাণী হতে পারে না- তার স্বপক্ষে বেশ কিছু যৌক্তিক কেস দাঁড় করানো হয়েছে। যে কেউ নিরপেক্ষ মন-মানসিকতা নিয়ে কোরআন স্টাডি করলে এই সিদ্ধান্তে উপণীত হবেন যে, কোরআনের মতন একটি গ্রন্থ লিখা মানুষের পক্ষে সত্যি সত্যি অসম্ভব।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১: কোরআনই হচ্ছে একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা নিজেই বক্তা এবং সেই সাথে বেশ কিছু আয়াতে কোরআনকে অত্যন্ত জোর দিয়ে সৃষ্টিকর্তার বাণী বলে দাবি করা হয়েছে। অতএব কোরআন খুব ভালভাবেই শর্ত-১ পূরণ করে। কিছু নমুনা: ১৪:১, ১৬:১০২, ২০:৪, ২৬:১৯২-১৯৪, ২৭:৬, ৩২:২, ৪৫:২, ৭৬:২৩, ৯৭:১, ইত্যাদি।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-২: কোরআনই হচ্ছে একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে কোরআনের দাবিকে ভুল প্রমাণ করার জন্য পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু ফলসিফিকেশন টেস্ট ও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়া হয়েছে। ফলসিফিকেশন টেস্ট (৪:৮২) অনুযায়ী কোরআনে সুস্পষ্ট ভুল-ভ্রান্তি বা অসঙ্গতি পাওয়া যায় না। অতএব অনেকটা জোর দিয়েই বলা যেতে পারে যে, কোরআন দ্বিতীয় শর্তও পূরণ করে। অধিকন্তু, নিজে গ্রন্থ লিখে এভাবে চ্যালেঞ্জ দেয়াটা আদৌ সম্ভব বা স্বাভাবিক না। মানব জাতির ইতিহাসে এমন চ্যালেঞ্জ কেউ কখনো দিয়েছেন বলেও মনে হয় না। মানুষ কখনো এই ধরণের চ্যালেঞ্জ দেয় না বা দেয়ার সাহস পায় না। তাও আবার বেশ কয়েকটি ধাপে চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়েছে! কিছু নমুনা: ৪:৮২, ১৭:৮৮, ১১:১৩, ২:২৩-২৪, ৫২:৩৩-৩৪, ১০:৩৭, ইত্যাদি।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-৩: কোরআনে বেশ কিছু ভবিষ্যদ্বাণী আছে। এ পর্যন্ত একটি ভবিষ্যদ্বাণীও ভুল প্রমাণিত হয়নি। ইতোমধ্যে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। অতএব সম্ভাবনার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ ভবিষ্যদ্বাণীগুলোও সঠিক হওয়ার কথা।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-৪: কোরআনই হচ্ছে একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে সেই ধর্মগ্রন্থের নাম (কোরআন), ধর্মের নাম (ইসলাম), ও অনুসারীদের নাম (মুসলিম) উল্লেখ করা হয়েছে (২:১৮৫, ৫:৩, ২:১২৮, ২:১৩১)। এই পৃথিবীর অন্য কোন ধর্মগ্রন্থে সেই ধর্মগ্রন্থের নাম, ধর্মের নাম, ও অনুসারীদের নাম পাওয়া যায় না। সবগুলো ধর্মগ্রন্থের বহিরাবরণ খুলে ফেলে ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কে অজ্ঞ কাউকে যদি সনাক্ত করতে বলা হয় সেক্ষেত্রে একমাত্র কোরআনকেই সনাক্ত করতে সক্ষম হবে।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-৫: কোরআনই হচ্ছে একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে তার আগের রেভিলেশনকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে (৫:৪৮, ৩:৩, ৩৭:৩৭, ৩৫:৩১, ১৫:৯, ১০:৩৭)- প্রচলিত কিছু বিশ্বাসকে সংশোধন করা হয়েছে (৪:১৭১, ৫:৭৩, ২১:২২, ২:১১৬, ৪:১৫৭)- এবং সেই সাথে নিজেকে ফুরকান (Criterion) হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে (২৫:১, ২:১৮৫)। নিজে একটি গ্রন্থ লিখে এভাবে ঘোষণা দেয়াটা কি সম্ভব।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-৬: কোরআনের দাবি অনুযায়ী কোরআনের পান্ডুলিপি এখন পর্যন্তও সংরক্ষিত আছে (১৫:৯)। এমনকি কোরআনের একটি আয়াতের উপর ভিত্তি করে একদম শুরু থেকে হাজার হাজার মানুষ সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্তও রেখে আসছে (৫৪:১৭)। আজ-ই যদি কোন দৈব দুর্বিপাকে পৃথিবীর বুক থেকে সবগুলো ধর্মগ্রন্থ নিশ্চিহ্ণ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে কোরআনই একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেটার প্রায় অবিকল অনুলিপি তৈরী করা সম্ভব। অবহেলা করার কোন উপায় নেই! সত্যিই একটি মিরাকল।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-৭: কোরআনে প্রসঙ্গক্রমে “This is the Truth- wherein there is no doubt” কথাটি কয়েক জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছে। এমনি এমনি কি কেউ এতটা জোর দিয়ে এমন কথা বলতে পারে।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-৮: ভাষাসম্বন্ধীয় মিরাকল (Literary excellence and eloquence)। এমনকি কিছু ক্রিস্টিয়ান স্কলারও স্বীকার করেন। এমনও নজির আছে যে, শুধুমাত্র কোরআন তিলাওয়াত শুনেই কেউ কেউ ইসলাম গ্রহণ করেছেন। ইউসুফ ইসলামের সবচেয়ে প্রিয় মিউজিক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে উত্তরে বলেছিলেন ‘কোরআন তিলাওয়াত’!
"The Quran is a miracle of purity, of style, of wisdom and of truth." – Rev. R. Bosworth-Smith
"Whenever I hear the Quran chanted, it is as though I am listening to music, underneath the flowing melody, there is sounding all the time the instant beat of a drum, it is like the beating of my heart." – A. J. Arberry
"That inimitable symphony, the very sound of which move men to tears and ecstacy." – Marmaduke Picktall
--------------------------------------------------------------------------
কেস-৯: কোরআনে সালভেশনের ফিলোসফি একদম স্পষ্ট ও সার্বজনিন (২:৬২, ৫:৬৯, ২২:১৭, ১০৩:১-৩)। অমানবিক বলার যেমন কারো সাধ্য নেই তেমনি আবার অবৈজ্ঞানিক বা অস্পষ্ট বলারও কোন পথ খোলা নেই। কারণ কোরআনে যেমন “অরিজিনাল সিন” বলে কিছু নেই তেমনি আবার কর্মফলের উপর ভিত্তি করে পূর্ববর্তী জীবনের পাপের ফলস্বরূপ পুনঃ পুনঃ জন্ম-মৃত্যুও নেই। প্রত্যেক শিশু নিষ্পাপ হয়ে জন্মগ্রহণ করে। শিশুরা পাপ বা অভিশাপের বোঝা মাথায় নিয়ে জন্মায় না। এর যৌক্তিক বা বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তিও নেই। বরঞ্চ নবজাতক শিশুকে পাপী বা অভিশপ্ত ধরে নেয়াটা চরম অমানবিক। একটি শিশু ভাল-মন্দ বিচারের জ্ঞান-বুদ্ধি হওয়ার আগেই যদি মারা যায় সেক্ষেত্রেও তাকে নিষ্পাপ ধরা হয়। এমনকি মানসিকভাবে বিকলাঙ্গ পূর্ণবয়স্ক মানুষদেরও নিষ্পাপ ধরা হয় (২৪:৬১)। কোরআন অনুযায়ী এই পার্থিব জগৎ একটি পরীক্ষাক্ষেত্র (১৮:৭, ৬৭:২, ২:২১৪, ২:১৫৫)। প্রত্যেক বিচার-বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ তার স্ব-স্ব বিশ্বাস ও কর্মের জন্য দায়ি থাকবে। এক জনকে অন্য জনের পাপের বোঝা বহন করতে হবে না (১৭:১৫, ৬:১৬৪)। বিশ্বাস-অবিশ্বাস এবং সেই সাথে নিজের ভাগ্য নিজে বেছে নেয়ার জন্য মানুষকে ফ্রী-চয়েস দেয়া হয়েছে (১৭:১৫, ১৮:২৯, ৭৬:৩, ১৩:১১)। এই জগতের ভাল-মন্দ কাজ ও ফ্রী-চয়েসের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী জগতের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। ভাগ্য তথা পরিণামও বলে দেয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সালভেশন হচ্ছে স্রষ্টার মহান একটি উপহার। তবে একদম ফ্রী-লাঞ্চ নয়! লাঞ্চের টোকেনস্বরূপ স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাসের পাশাপাশি ভাল কাজও করতে হবে (৪:১২২, ৮৫:১১, ১৮:১০৭, ১৯:৬১, ৩২:১৯, ২৯:৯, ২:১১২, ২:১৭৭)। অন্যথায় ন্যায়-অন্যায় বা ভাল-মন্দের মধ্যে কোন পার্থক্য থাকে না!
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১০: ইসলামের ইতিহাস থেকে জানা যায় মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জন্মের আগেই পিতা মারা গেছেন। মাত্র ছয় বছর বয়সে মাতা মারা গেছেন। সবগুলো পুত্র সন্তান ছোট বেলায় মারা গেছেন। এমনকি একজন ছাড়া বাদবাকি কন্যা সন্তানরাও তাঁর আগে মারা গেছেন। প্রায় সারাটা জীবন সংগ্রাম ও প্রতিকূলতার মধ্যে অতিবাহিত করতে হয়েছে। অথচ এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্যগুলোর কিছুই কোরআনে নেই! শুধু তা-ই নয়, তাঁর জীবনের সাথে জড়িত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্যক্তিত্ব যেমন হযরত খাদিজা, হযরত আয়েশা, হযরত আবু বকর, হযরত ওমর, হযরত ওসমান, ও হযরত আলী (রাঃ) সহ আরো অনেকের জীবন বৃত্তান্ত তো দূরে থাক তাঁদের নাম পর্যন্ত কোরআনে নেই! অথচ এক পালক পুত্রের নাম সহ নাম না-জানা অনেকের নাম কোরআনে এসেছে! অতীতের অনেক ঘটনাও কোরআনে এসেছে। এমনকি যীশুখ্রিস্টের মাতা মেরির নামে কোরআনে একটি পূর্ণাঙ্গ চ্যাপ্টার আছে এবং মাতা মেরিকে নারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ সম্মানও দেওয়া হয়েছে। অথচ প্রফেট মুহাম্মদের মাতা-পিতা, স্ত্রী, ও ছেলে-মেয়েদের নাম পর্যন্ত কোরআনে স্থান পায়নি! বাস্তবে আদৌ কি সম্ভব! কোরআন প্রফেট মুহাম্মদের নিজস্ব বাণী হলে অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই তাঁর জীবনের কিছু স্মৃতি, হৃদয়বিদারক দৃশ্য, ও কিছু নিকটতম ব্যক্তিত্ব কোরআনে স্থান পাওয়ার কথা। অধিকন্তু, কোরআনই একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে সেই ধর্মগ্রন্থের মেসেঞ্জারের বিরুদ্ধে সমালোচকদের বিভিন্ন সমালোচনা ও অভিযোগের জবাব দেয়া হয়েছে। প্রফেট মুহাম্মদকে বিভিন্নভাবে উপহাস-বিদ্রূপ করে কোরআনে কিছু আয়াতও আছে। এমনকি প্রফেট মুহাম্মদের ব্যক্তিগত জীবনের দু-একটি তিক্ত ঘটনাও কোরআনে স্থান পেয়েছে (৬৬:১, ৮০:১-৪, ৮:৬৭, ৯:৮৪, ১৬:১২৬)। কোরআনের উপর প্রফেট মুহাম্মদের হাত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচকদের উপহাস-বিদ্রূপ, অভিযোগ, ও তিক্ত ঘটনাগুলো কিন্তু সহজেই এড়িয়ে যেতে পারতেন। ফলে যে কোন যুক্তিবাদী মানুষের এখানে থেমে গিয়ে কিছুক্ষণ চিন্তা করার কথা।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১১: হাদিসকে বলা হয় প্রফেট মুহাম্মদের নিজস্ব বাণী। কোরআনও প্রফেট মুহাম্মদের বাণী হলে হাদিস ও কোরআনের মধ্যে মৌলিক কোন পার্থক্য থাকার কথা না। কিন্তু বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, হাদিস ও কোরআনের বাণীর মধ্যে রাত-দিন তফাৎ (Hadith books are a living witness, which proves that the Quran is not the word of Prophet Muhammad or any other human.) অধিকন্তু, কোরআন যদি প্রফেট মুহাম্মদের নিজস্ব বাণী হতো বা প্রফেট মুহাম্মদের নামে কেউ যদি লিখতেন সেক্ষেত্রে খুব স্বাভাবিকভাবেই কোরআনের “কেন্দ্রীয় চরিত্র” হতেন প্রফেট মুহাম্মদ। অথচ কোরানের “কেন্দ্রীয় চরিত্র” হচ্ছেন আল্লাহ। কোরআনে আসলে প্রফেট মুহাম্মদকে বিভিন্নভাবে আদেশ-উপদেশ দেয়া হয়েছে। তার ডজন ডজন প্রমাণ আছে। কে আদেশ-উপদেশ দিয়েছেন? আল্লাহ। কোরআনের মতন একটি গ্রন্থ লিখে কেউ কি কখনো কাল্পনিক কারো বাণী বলে চালিয়ে দিয়েছেন? ইতিহাসে এমন কোন নজির নেই! কোরআন যেভাবে লিখা হয়েছে সেভাবে আসলে সম্ভবও নয়।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১২: কোরআন যে প্রফেট মুহাম্মদ বা কোন মানুষের নিজস্ব বাণী হতে পারে না তার জ্বলন্ত একটি প্রমাণ হচ্ছে, কোরআনে যেখানে ইব্রাহীম (আঃ), ঈসা (আঃ), ও মূসা (আঃ) প্রমূখদের নাম ডজন ডজন বার উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে প্রফেট মুহাম্মদের নাম এসেছে মাত্র চার বার! প্রফেট মুহাম্মদ নিজে কোরআন লিখলে ডজনেরও বেশী নাম না-জানা ব্যক্তিত্বদের নাম ও তাঁদের বর্ণনা কোরআনে আসাটা অত্যন্ত অস্বাভাবিক, যেখানে তাঁর নিজের সম্বন্ধেই তেমন কিছু নেই এবং তাঁর জীবনের সাথে জড়িত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের নাম পর্যন্তও কোরআনে স্থান পায়নি! অপরদিকে অন্য কোন মানুষ যদি মুহাম্মদকে আল্লাহর মেসেঞ্জার বানিয়ে কোরআন লিখতেন (যদিও অসম্ভব- কারণ প্রফেট মুহাম্মদ সেই সময় জীবিত ছিলেন এবং এই অভিযোগকে কবর দেয়ার জন্য কোরআনই যথেষ্ট) সেক্ষেত্রেও খুব স্বাভাবিকভাবেই কোরআনের “কেন্দ্রীয় চরিত্র” হতেন প্রফেট মুহাম্মদ। যেমন নিউ টেস্টামেন্ট ও গীতার “কেন্দ্রীয় চরিত্র” হচ্ছেন যথাক্রমে যীশুখ্রিস্ট ও শ্রীকৃষ্ণ।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১৩: কোরআনই হচ্ছে একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেটা সেই ধর্মের প্রচারক নিজের জীবদ্বশায় এবং নিজের তত্ত্বাবধানে লিখে সমাপ্ত করে গেছেন। অপরদিকে অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ কিছুটা হাদিসের মতন। অন্যান্য ধর্মের প্রচারকদের মৃত্যুর অনেক পর তাঁদের নামে ধর্মগ্রন্থ লিখা হয়েছে। কোন কোন ধর্মগ্রন্থে আবার সেই ধর্মের প্রচারককে গড বা গডের পুত্র বানিয়ে দেয়া হয়েছে।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১৪: কোরআনের অসংখ্য আয়াতে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এবং সরাসরি বিশ্বাস-অবিশ্বাস ও ধর্মীয় স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে (১৮:২৯, ৬:১০৪, ১০:৯৯, ১৭:১৫, ৪২:৪৮, ৬:১০৮, ৭৬:৩, ১০৯:৬, ২:২৫৬)। অন্য কোন ধর্মগ্রন্থে এভাবে সরাসরি বিশ্বাস-অবিশ্বাস ও ধর্মীয় স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে বলে মনে হয় না।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১৫: কোরআনে এমন কোন শিক্ষা নেই যেটা মানবতার বিরুদ্ধে যেতে পারে। কোরআনে এমন কোন মতবাদ বা বিশ্বাসও নেই যার দ্বারা পার্থিব জগতে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে ফায়দা লোটা সম্ভব। যেমন: জন্মান্তরবাদ ও অরিজিনাল সিন। কোরআনে এমনকি পৌরোহিত্যকেও বাতিল করা হয়েছে (৯:৩১, ৯:৩৪, ২:৪১, ২:১৭৪)। কোরআন অনুযায়ী স্রষ্টার সাথে মানুষের সরাসরি সম্পর্ক- কোনরকম মধ্যস্থতাকারী নেই।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১৬: কোরআনই সম্ভবত একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাসীদের জন্য বেশ কিছু যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে এবং সেই সাথে সমালোচকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দেয়া হয়েছে। কোরআনের স্বর ও বাচনভঙ্গীও অন্য যে কোন গ্রন্থ বা ধর্মগ্রন্থ থেকে অসাধারণভাবে আলাদা। কোরআনে মাঝে-মধ্যেই পাঠকদের প্রতি প্রশ্ন ও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি কোন একটি বিষয়ে বর্ণনা দেয়ার পর বিশ্বাসের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এভাবে: Think ... Ponder ... Reflect ... Pay heed ... the Quran is for those who possess intelligence ... Will you not use your sense? ... Do you not understand? ... If you are in doubt, then consider this or that ... Which of the favours of your Lord will you deny? ... Will you not then believe? (২২:৫-৭, ৩:১৯০, ১০:২৪, ১৩:৩, ৩০:৮, ৩৯:২৭, ৭৫:৩-৪, ৬:৫০, ২১:১০, ২১:৩০, ২৩:১২-১৬, ৪১:৫৩, ৪৭:২৪, ৫২:৩৫-৩৬, ৫৫:১-৭৮)।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১৭: কোরআনের একটি সুরাতে সংক্ষেপে গডের সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে- যাকে বলে টাচস্টোন-অফ-থিয়লজি (১১২:১-৪)। যে কোন গডের ক্ষেত্রে এই সংজ্ঞা প্রয়োগ করে দেখা যেতে পারে।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১৮: ক্রিস্টিয়ান স্কলাররা যেহেতু কোরআন নিয়ে গবেষণা করেন সেহেতু তারা কোরআন সম্পর্কে ভালভাবেই অবগত। তারা এমনকি প্রফেট মুহাম্মদকেও কোরআনের অথার মানতে নারাজ! অবস্থার উপর নির্ভর করে কখনো বলা হয় কোরআন হচ্ছে মুহাম্মদের বাণী। কখনো বলা হয় ইহুদি রাবাইদের বাণী! কখনো বলা হয় ক্রিস্টিয়ান পাদ্রীদের বাণী! কখনো বলা হয় স্যাটানের বাণী! কখনো বলা হয় ডেভিলের বাণী! কখনো বলা হয় মৃগী রোগীর বাণী! কখনো বা আবার বলা হয় মুহাম্মদের কোন এক সেক্রেটারির বাণী! তাহলে কোন্টি সত্য! সবগুলো তো আর সত্য হতে পারে না! মজার বিষয় হচ্ছে তারা একই সাথে সবগুলোকেই সত্য দেখতে চায়! প্রায় চল্লিশ জন অথার মিলে প্রায় পনেরশ’ বছর ধরে যেহেতু বাইবেল লিখা হয়েছে সেহেতু কোরআনের ক্ষেত্রে তারা এমনকি প্রফেট মুহাম্মদকেও একা ক্রেডিট দিতে লজ্জাবোধ করেন! মানব জাতির ইতিহাসে দ্বিতীয় কোন গ্রন্থের বিরুদ্ধে যেহেতু এরকম বিজেয়ার (Bizarre) ও র্যা ন্ডম (Random) মতামত নেই সেহেতু এ থেকে একটি বিষয় সুস্পষ্ট যে, কোরআনে মানুষের চেয়ে বড় কোন শক্তি কাজ করেছে।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১৯: অন্যান্য ধর্ম এমন কিছু আলৌকিকতা ও বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে যেগুলো ধর্মগ্রন্থ দিয়ে কোনভাবেই প্রমাণ করা সম্ভব নয় বা এমনকি যৌক্তিক কোন ভিত্তিও নেই। অন্যদিকে ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস দাঁড়িয়ে আছে কোরআনের উপর ভিত্তি করে। অর্থাৎ ইসলামের ভিত্তি হচ্ছে কোরআন (২৯:৫১, ৩০:৫৮), যেটা যুক্তির দ্বারা খণ্ডনযোগ্য। প্রকৃতপক্ষে ইসলামের মৌলিক ভিত্তি হচ্ছে একক গড ও গডের মেসেঞ্জারে বিশ্বাস। একক গডের অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার চেয়ে বড় বোকামি আর দ্বিতীয়টি নেই। এবার প্রশ্ন হচ্ছে, গড থেকে থাকলে তাঁর পক্ষে মানুষের সাথে যোগাযোগ করাটা স্বাভাবিক ও সম্ভব কি-না। উত্তর হচ্ছে, অবশ্যই স্বাভাবিক এবং বিষয়টি বিজ্ঞানসম্মতও বটে (যেমন: বেতার তরঙ্গ)। উদাহরণস্বরূপ, জাতিসংঘের মহাসচিব ইচ্ছে করলে জাতিসংঘে বসেই বাংলাদেশের একজন মানুষের কাছে বিভিন্ন মাধ্যমে তাঁর বাণী পৌঁছে দিতে পারেন। অতএব “গড ও গডের মেসেঞ্জার” সম্পূর্ণ যৌক্তিক একটি বিশ্বাস।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-২০: কোরআনে মানুষকে নেচার পর্যবেক্ষণের জন্য যেভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে- এই পৃথিবীর অন্য কোন ধর্মগ্রন্থে সেভাবে উৎসাহিত করা হয়নি। কোরআনের বেশ কিছু বক্তব্য প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানের সাথে সহমতও পোষণ করে। তবে একটি গ্রন্থের কিছু বক্তব্য বিজ্ঞানের সাথে সহমত পোষণ করা মানেই কিন্তু সেই গ্রন্থটি এমনি এমনি গডের বাণী হয়ে যায় না। শর্ত-১ ও শর্ত-২ পূরণ করার পরই কেবল এই বিষয়টাকে একটি যুক্তি হিসেবে ধরা যেতে পারে।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-২১: কোরআনের কিছু সাংখ্যিক মাহাত্ম্য সত্যিই আশ্চর্যজনক।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-২২: কোরআন এমন একটি গ্রন্থ যেটি পড়তে গেলে পাঠকের মন কখনো স্রষ্টার দিকে...কখনো স্রষ্টার মেসেঞ্জারের দিকে...কখনো মহাবিশ্বের উৎপত্তির দিকে...কখনো মানুষের উৎপত্তির দিকে...কখনো মহাকাশ ও গ্রহ-নক্ষত্রের দিকে...কখনো আকাশ-বাতাস ও ঝড়-বৃষ্টির দিকে...কখনো নদ-নদীর দিকে...কখনো সমুদ্রের দিকে...কখনো পাহাড়-পর্বতের দিকে…কখনো গাছ-পালা-ফল-মূলের দিকে...কখনো পশু-পাখির দিকে...কখনো বিজ্ঞানের দিকে...কখনো দর্শনের দিকে...কখনো কবিতার দিকে...কখনো সাহিত্যের দিকে...কখনো ইতিহাসের দিকে...কখনো ইহুদীদের দিকে...কখনো ক্রিস্টিয়ানদের দিকে...কখনো সাবিয়ানদের দিকে...কখনো ম্যাজিয়ানদের দিকে...কখনো পেগানদের দিকে...কখনো মুসলিমদের দিকে...কখনো বিশ্বাসীদের দিকে...কখনো অবিশ্বাসীদের দিকে...কখনো সামাজিক আইন-কানুনের দিকে...কখনো অর্থনীতির দিকে...কখনো নৈতিকতার দিকে...কখনো যুদ্ধের দিকে...কখনো নামাজ-রোযার দিকে...কখনো চ্যারিটির দিকে...কখনো এতিম-বিধবাদের দিকে...কখনো মা-বাবা-ভাই-বোনের দিকে...কখনো প্রতিবেশীর দিকে...কখনো নারী-পুরুষের দিকে...কখনো বিয়ে-শাদীর দিকে...কখনো জান্নাত-জাহান্নামের দিকে...ইত্যাদি...ইত্যাদি...ইত্যাদির দিকে যাবে। অধিকন্তু, কোরআনই হচ্ছে একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেটিকে দেড় বিলিয়নেরও বেশী মানুষ মনে-প্রাণে এই মহাবিশ্বের স্রষ্টার বাণী হিসেবে বিশ্বাস করে, যথাসাধ্য অনুসরণ করার চেষ্টা করে, এবং সেই সাথে ডিফেন্ডও করে। এমন গ্রন্থ পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই!
--------------------------------------------------------------------------
কেস-২৩: কোরআন যে সত্যি সত্যি একটি লিভিং মিরাকল তার জ্বলন্ত একটি প্রমাণ হচ্ছে ৯-১১ নাটক। ৯-১১ নাটককে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপী ইসলাম, মুসলিম, ও প্রফেট মুহাম্মদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে যে ঘৃণা-বিদ্বেষ ও অপপ্রচার চালানো হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে তা চিন্তারও বাহিরে। অথচ ৯-১১ নাটকের পর খোদ আমেরিকাতেই ইসলাম গ্রহণের হার সবচেয়ে বেশী। পাশাপাশি বৃটেন, জার্মানি, ও ফ্রান্স তো আছেই। একে মিরাকল ছাড়া আর কী-ই বা বলা যায়! এর একমাত্র কারণ হচ্ছে কোরআন। ৯-১১ এর মতন ঘটনাকে কেন্দ্র করে অন্য কোন ধর্ম ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ঘৃণা-বিদ্বেষ ও অপপ্রচার চালানো হলে অন্যান্য ধর্মের লোকজন কি সেই ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হবে। কোরআনের আরেকটি মিরাকল হচ্ছে, ইসলাম গ্রহণের পর অনেকেই আবার তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ ইসলাম প্রচারে ব্যয় করেন। ইসলাম প্রচারে তাদের অসাধারণ দৃঢ়তা ও আগ্রহ সত্যিই অবাক করার মতন। তারা এতটাই ডিভোটেড, এতটাই প্রাউড, ও এতটাই কনফিডেন্ট যে, তাদের দেখলে জন্মসূত্রে মুসলিমরা লজ্জা পাবে! কারো বিশ্বাস না হলে কোথাও না যেয়ে শুধুমাত্র ইউটিউবে Sheikh Yusuf Estes, Dr. Gary Miller, Abdur Raheem Green, Dr. Bilal Philips, Khalid Yasin, Yusuf Islam, Yusuf Chambers, Dr. Murad Hoffman, Prof. Jeffery Lang, Hamza Yusuf Hanson, Yassir Fazaga, Abdal-Hakim Murad, Idris Tawfiq, Abdullah Hakim Quick, Malcolm X, Michael Wolfe, Dr. Ingrid Mattson, Yvonne Ridley ইত্যাদি নাম লিখে সার্চ দিয়ে তাদের লেকচারগুলো শোনা যেতে পারে। এঁরা ছাড়াও ইউটিউবে আরো অনেকে আছেন। অন্যান্য ধর্মেও কম-বেশী ধর্মান্তরিত হয়। কিন্তু ধর্মান্তরিত হওয়ার পর সেই সকল ধর্ম প্রচারের জন্য তাদের মধ্যে তেমন কোন আগ্রহ দেখা যায় না। তার মানে তারা আবেগ অথবা কোন কিছুর ফাঁদে পড়ে ধর্মান্তরিত হয়।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-২৪: কোরআন বহির্ভূত প্রমাণ। তৌরাত ও ইঞ্জিলে একজন প্রফেট সম্পর্কে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী আছে। বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, সেই ভবিষ্যদ্বাণীগুলো প্রফেট মুহাম্মদ ছাড়া অন্য কারো সাথে খাপ খায় না। এমনকি কোরআনেও দাবি করা হয়েছে যে, মুহাম্মদই হচ্ছেন তৌরাত ও ইঞ্জিলে উল্লেখিত প্রফেট (৭:১৫৭, ৬১:৬)। তৌরাত ও ইঞ্জিলে সত্যি সত্যি ভবিষ্যদ্বাণী না থাকলে কেউ এমনি এমনি এভাবে দাবি করতে পারেন না নিশ্চয়।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-২৫: কোরআন এমন একটি গ্রন্থ, যে গ্রন্থে অবিশ্বাস করা মানে প্রফেট মুহাম্মদকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মিথ্যাবাদী ও প্রতারক হিসেবে বিশ্বাস করা। কারণ প্রফেট মুহাম্মদ দীর্ঘ তেইশ বছরে কখনোই কোরআনকে নিজের বাণী বলে দাবি করেননি। তিনি একদম প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কোরআনকে এই মহাবিশ্বের স্রষ্টার রেভিলেশন বলে দাবি করেছেন। ফলে কোরআনকে প্রফেট মুহাম্মদ বা অন্য কারো বাণী বলাটা অযৌক্তিক, অনৈতিক, এবং সেই সাথে অন্ধ-বিশ্বাসও বটে।
জায়গার স্বল্পতার কারণে বিস্তারিত লিখা সম্ভব হলো না। তথাপি নিরপেক্ষ ও মুক্তমনে উপরের সবগুলো কেস সার্বিকভাবে বিবেচনা করে দেখুন তো কোরআনকে কোন মানুষের বাণী হিসেবে আরোপ করা যায় কি-না। কোরআনে বিশ্বাসের স্বপক্ষে বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে কেস দাঁড় করিয়েছেন। আগে তো কেস দাঁড় করাতে হবে- তারপরই না কেবল সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের প্রশ্ন আসবে। ইহাই যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিক নিয়ম। ইচ্ছে করলে যে কেউ, যে কোন সময়, উপরোল্লেখিত কেসগুলো যাচাইও করতে পারেন।
-------------------------------------------------------------------------
লেখাটা কপি পেষ্ট। মূল লেখক কে জানি না। আল্লাহ তাকে তার এই কষ্টের বিনিময়ে জান্নাত দান করুন। আমীন।

শর্ত-১: গ্রন্থটিকে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার বাণী বলে দাবি করতে হবে। অর্থাৎ গ্রন্থটি যে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার বাণী- সেটা গ্রন্থের মধ্যে সুস্পষ্টভাবে লিখা থাকতে হবে। দাবি করাটা কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে গ্রন্থকে সৃষ্টিকর্তার বাণী বলে দাবিই করা হয়নি সেই গ্রন্থকে আবার সৃষ্টিকর্তার বাণী হিসেবে বিশ্বাস করাটাই তো বোকামি। আগে তো দাবি করতে হবে- তারপরই না কেবল দাবিটা সত্য নাকি মিথ্যা এবং সেই সাথে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্ন আসবে।
শর্ত-২: গ্রন্থটিকে ভুল-ভ্রান্তি ও অসঙ্গতি থেকে মুক্ত হতে হবে। একটি গ্রন্থকে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার বাণী বলে দাবি করার পরও যদি তার মধ্যে সুস্পষ্ট ভুল-ভ্রান্তি বা অসঙ্গতি থাকে সেক্ষেত্রে সেই গ্রন্থটি স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।
এই দুটি শর্ত পূরণ করার পরই কেবল একটি গ্রন্থ এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার বাণী কি-না- বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখা যেতে পারে। নিদেনপক্ষে শর্ত-১ পূরণ করতেই হবে। কারণ শর্ত-১ পূরণ করতে না পারলে সেই গ্রন্থ নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রশ্নই আসে না।
ইসলামে বিশ্বাসীদের যদি জিজ্ঞেস করা হয় তারা কেন কোরআনে বিশ্বাস করে- অর্থাৎ তাদের বিশ্বাসের ভিত্তি কী? একেক জন হয়তো একেক ভাবে উত্তর দেবেন। তবে মোটামুটিভাবে নিম্নের যুক্তিগুলো চলে আসবে। কোরআন যে কোন মানুষের নিজস্ব বাণী হতে পারে না- তার স্বপক্ষে বেশ কিছু যৌক্তিক কেস দাঁড় করানো হয়েছে। যে কেউ নিরপেক্ষ মন-মানসিকতা নিয়ে কোরআন স্টাডি করলে এই সিদ্ধান্তে উপণীত হবেন যে, কোরআনের মতন একটি গ্রন্থ লিখা মানুষের পক্ষে সত্যি সত্যি অসম্ভব।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১: কোরআনই হচ্ছে একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা নিজেই বক্তা এবং সেই সাথে বেশ কিছু আয়াতে কোরআনকে অত্যন্ত জোর দিয়ে সৃষ্টিকর্তার বাণী বলে দাবি করা হয়েছে। অতএব কোরআন খুব ভালভাবেই শর্ত-১ পূরণ করে। কিছু নমুনা: ১৪:১, ১৬:১০২, ২০:৪, ২৬:১৯২-১৯৪, ২৭:৬, ৩২:২, ৪৫:২, ৭৬:২৩, ৯৭:১, ইত্যাদি।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-২: কোরআনই হচ্ছে একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে কোরআনের দাবিকে ভুল প্রমাণ করার জন্য পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু ফলসিফিকেশন টেস্ট ও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়া হয়েছে। ফলসিফিকেশন টেস্ট (৪:৮২) অনুযায়ী কোরআনে সুস্পষ্ট ভুল-ভ্রান্তি বা অসঙ্গতি পাওয়া যায় না। অতএব অনেকটা জোর দিয়েই বলা যেতে পারে যে, কোরআন দ্বিতীয় শর্তও পূরণ করে। অধিকন্তু, নিজে গ্রন্থ লিখে এভাবে চ্যালেঞ্জ দেয়াটা আদৌ সম্ভব বা স্বাভাবিক না। মানব জাতির ইতিহাসে এমন চ্যালেঞ্জ কেউ কখনো দিয়েছেন বলেও মনে হয় না। মানুষ কখনো এই ধরণের চ্যালেঞ্জ দেয় না বা দেয়ার সাহস পায় না। তাও আবার বেশ কয়েকটি ধাপে চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়েছে! কিছু নমুনা: ৪:৮২, ১৭:৮৮, ১১:১৩, ২:২৩-২৪, ৫২:৩৩-৩৪, ১০:৩৭, ইত্যাদি।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-৩: কোরআনে বেশ কিছু ভবিষ্যদ্বাণী আছে। এ পর্যন্ত একটি ভবিষ্যদ্বাণীও ভুল প্রমাণিত হয়নি। ইতোমধ্যে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। অতএব সম্ভাবনার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ ভবিষ্যদ্বাণীগুলোও সঠিক হওয়ার কথা।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-৪: কোরআনই হচ্ছে একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে সেই ধর্মগ্রন্থের নাম (কোরআন), ধর্মের নাম (ইসলাম), ও অনুসারীদের নাম (মুসলিম) উল্লেখ করা হয়েছে (২:১৮৫, ৫:৩, ২:১২৮, ২:১৩১)। এই পৃথিবীর অন্য কোন ধর্মগ্রন্থে সেই ধর্মগ্রন্থের নাম, ধর্মের নাম, ও অনুসারীদের নাম পাওয়া যায় না। সবগুলো ধর্মগ্রন্থের বহিরাবরণ খুলে ফেলে ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কে অজ্ঞ কাউকে যদি সনাক্ত করতে বলা হয় সেক্ষেত্রে একমাত্র কোরআনকেই সনাক্ত করতে সক্ষম হবে।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-৫: কোরআনই হচ্ছে একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে তার আগের রেভিলেশনকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে (৫:৪৮, ৩:৩, ৩৭:৩৭, ৩৫:৩১, ১৫:৯, ১০:৩৭)- প্রচলিত কিছু বিশ্বাসকে সংশোধন করা হয়েছে (৪:১৭১, ৫:৭৩, ২১:২২, ২:১১৬, ৪:১৫৭)- এবং সেই সাথে নিজেকে ফুরকান (Criterion) হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে (২৫:১, ২:১৮৫)। নিজে একটি গ্রন্থ লিখে এভাবে ঘোষণা দেয়াটা কি সম্ভব।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-৬: কোরআনের দাবি অনুযায়ী কোরআনের পান্ডুলিপি এখন পর্যন্তও সংরক্ষিত আছে (১৫:৯)। এমনকি কোরআনের একটি আয়াতের উপর ভিত্তি করে একদম শুরু থেকে হাজার হাজার মানুষ সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্তও রেখে আসছে (৫৪:১৭)। আজ-ই যদি কোন দৈব দুর্বিপাকে পৃথিবীর বুক থেকে সবগুলো ধর্মগ্রন্থ নিশ্চিহ্ণ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে কোরআনই একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেটার প্রায় অবিকল অনুলিপি তৈরী করা সম্ভব। অবহেলা করার কোন উপায় নেই! সত্যিই একটি মিরাকল।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-৭: কোরআনে প্রসঙ্গক্রমে “This is the Truth- wherein there is no doubt” কথাটি কয়েক জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছে। এমনি এমনি কি কেউ এতটা জোর দিয়ে এমন কথা বলতে পারে।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-৮: ভাষাসম্বন্ধীয় মিরাকল (Literary excellence and eloquence)। এমনকি কিছু ক্রিস্টিয়ান স্কলারও স্বীকার করেন। এমনও নজির আছে যে, শুধুমাত্র কোরআন তিলাওয়াত শুনেই কেউ কেউ ইসলাম গ্রহণ করেছেন। ইউসুফ ইসলামের সবচেয়ে প্রিয় মিউজিক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে উত্তরে বলেছিলেন ‘কোরআন তিলাওয়াত’!
"The Quran is a miracle of purity, of style, of wisdom and of truth." – Rev. R. Bosworth-Smith
"Whenever I hear the Quran chanted, it is as though I am listening to music, underneath the flowing melody, there is sounding all the time the instant beat of a drum, it is like the beating of my heart." – A. J. Arberry
"That inimitable symphony, the very sound of which move men to tears and ecstacy." – Marmaduke Picktall
--------------------------------------------------------------------------
কেস-৯: কোরআনে সালভেশনের ফিলোসফি একদম স্পষ্ট ও সার্বজনিন (২:৬২, ৫:৬৯, ২২:১৭, ১০৩:১-৩)। অমানবিক বলার যেমন কারো সাধ্য নেই তেমনি আবার অবৈজ্ঞানিক বা অস্পষ্ট বলারও কোন পথ খোলা নেই। কারণ কোরআনে যেমন “অরিজিনাল সিন” বলে কিছু নেই তেমনি আবার কর্মফলের উপর ভিত্তি করে পূর্ববর্তী জীবনের পাপের ফলস্বরূপ পুনঃ পুনঃ জন্ম-মৃত্যুও নেই। প্রত্যেক শিশু নিষ্পাপ হয়ে জন্মগ্রহণ করে। শিশুরা পাপ বা অভিশাপের বোঝা মাথায় নিয়ে জন্মায় না। এর যৌক্তিক বা বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তিও নেই। বরঞ্চ নবজাতক শিশুকে পাপী বা অভিশপ্ত ধরে নেয়াটা চরম অমানবিক। একটি শিশু ভাল-মন্দ বিচারের জ্ঞান-বুদ্ধি হওয়ার আগেই যদি মারা যায় সেক্ষেত্রেও তাকে নিষ্পাপ ধরা হয়। এমনকি মানসিকভাবে বিকলাঙ্গ পূর্ণবয়স্ক মানুষদেরও নিষ্পাপ ধরা হয় (২৪:৬১)। কোরআন অনুযায়ী এই পার্থিব জগৎ একটি পরীক্ষাক্ষেত্র (১৮:৭, ৬৭:২, ২:২১৪, ২:১৫৫)। প্রত্যেক বিচার-বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ তার স্ব-স্ব বিশ্বাস ও কর্মের জন্য দায়ি থাকবে। এক জনকে অন্য জনের পাপের বোঝা বহন করতে হবে না (১৭:১৫, ৬:১৬৪)। বিশ্বাস-অবিশ্বাস এবং সেই সাথে নিজের ভাগ্য নিজে বেছে নেয়ার জন্য মানুষকে ফ্রী-চয়েস দেয়া হয়েছে (১৭:১৫, ১৮:২৯, ৭৬:৩, ১৩:১১)। এই জগতের ভাল-মন্দ কাজ ও ফ্রী-চয়েসের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী জগতের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। ভাগ্য তথা পরিণামও বলে দেয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সালভেশন হচ্ছে স্রষ্টার মহান একটি উপহার। তবে একদম ফ্রী-লাঞ্চ নয়! লাঞ্চের টোকেনস্বরূপ স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাসের পাশাপাশি ভাল কাজও করতে হবে (৪:১২২, ৮৫:১১, ১৮:১০৭, ১৯:৬১, ৩২:১৯, ২৯:৯, ২:১১২, ২:১৭৭)। অন্যথায় ন্যায়-অন্যায় বা ভাল-মন্দের মধ্যে কোন পার্থক্য থাকে না!
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১০: ইসলামের ইতিহাস থেকে জানা যায় মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জন্মের আগেই পিতা মারা গেছেন। মাত্র ছয় বছর বয়সে মাতা মারা গেছেন। সবগুলো পুত্র সন্তান ছোট বেলায় মারা গেছেন। এমনকি একজন ছাড়া বাদবাকি কন্যা সন্তানরাও তাঁর আগে মারা গেছেন। প্রায় সারাটা জীবন সংগ্রাম ও প্রতিকূলতার মধ্যে অতিবাহিত করতে হয়েছে। অথচ এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্যগুলোর কিছুই কোরআনে নেই! শুধু তা-ই নয়, তাঁর জীবনের সাথে জড়িত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্যক্তিত্ব যেমন হযরত খাদিজা, হযরত আয়েশা, হযরত আবু বকর, হযরত ওমর, হযরত ওসমান, ও হযরত আলী (রাঃ) সহ আরো অনেকের জীবন বৃত্তান্ত তো দূরে থাক তাঁদের নাম পর্যন্ত কোরআনে নেই! অথচ এক পালক পুত্রের নাম সহ নাম না-জানা অনেকের নাম কোরআনে এসেছে! অতীতের অনেক ঘটনাও কোরআনে এসেছে। এমনকি যীশুখ্রিস্টের মাতা মেরির নামে কোরআনে একটি পূর্ণাঙ্গ চ্যাপ্টার আছে এবং মাতা মেরিকে নারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ সম্মানও দেওয়া হয়েছে। অথচ প্রফেট মুহাম্মদের মাতা-পিতা, স্ত্রী, ও ছেলে-মেয়েদের নাম পর্যন্ত কোরআনে স্থান পায়নি! বাস্তবে আদৌ কি সম্ভব! কোরআন প্রফেট মুহাম্মদের নিজস্ব বাণী হলে অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই তাঁর জীবনের কিছু স্মৃতি, হৃদয়বিদারক দৃশ্য, ও কিছু নিকটতম ব্যক্তিত্ব কোরআনে স্থান পাওয়ার কথা। অধিকন্তু, কোরআনই একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে সেই ধর্মগ্রন্থের মেসেঞ্জারের বিরুদ্ধে সমালোচকদের বিভিন্ন সমালোচনা ও অভিযোগের জবাব দেয়া হয়েছে। প্রফেট মুহাম্মদকে বিভিন্নভাবে উপহাস-বিদ্রূপ করে কোরআনে কিছু আয়াতও আছে। এমনকি প্রফেট মুহাম্মদের ব্যক্তিগত জীবনের দু-একটি তিক্ত ঘটনাও কোরআনে স্থান পেয়েছে (৬৬:১, ৮০:১-৪, ৮:৬৭, ৯:৮৪, ১৬:১২৬)। কোরআনের উপর প্রফেট মুহাম্মদের হাত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচকদের উপহাস-বিদ্রূপ, অভিযোগ, ও তিক্ত ঘটনাগুলো কিন্তু সহজেই এড়িয়ে যেতে পারতেন। ফলে যে কোন যুক্তিবাদী মানুষের এখানে থেমে গিয়ে কিছুক্ষণ চিন্তা করার কথা।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১১: হাদিসকে বলা হয় প্রফেট মুহাম্মদের নিজস্ব বাণী। কোরআনও প্রফেট মুহাম্মদের বাণী হলে হাদিস ও কোরআনের মধ্যে মৌলিক কোন পার্থক্য থাকার কথা না। কিন্তু বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, হাদিস ও কোরআনের বাণীর মধ্যে রাত-দিন তফাৎ (Hadith books are a living witness, which proves that the Quran is not the word of Prophet Muhammad or any other human.) অধিকন্তু, কোরআন যদি প্রফেট মুহাম্মদের নিজস্ব বাণী হতো বা প্রফেট মুহাম্মদের নামে কেউ যদি লিখতেন সেক্ষেত্রে খুব স্বাভাবিকভাবেই কোরআনের “কেন্দ্রীয় চরিত্র” হতেন প্রফেট মুহাম্মদ। অথচ কোরানের “কেন্দ্রীয় চরিত্র” হচ্ছেন আল্লাহ। কোরআনে আসলে প্রফেট মুহাম্মদকে বিভিন্নভাবে আদেশ-উপদেশ দেয়া হয়েছে। তার ডজন ডজন প্রমাণ আছে। কে আদেশ-উপদেশ দিয়েছেন? আল্লাহ। কোরআনের মতন একটি গ্রন্থ লিখে কেউ কি কখনো কাল্পনিক কারো বাণী বলে চালিয়ে দিয়েছেন? ইতিহাসে এমন কোন নজির নেই! কোরআন যেভাবে লিখা হয়েছে সেভাবে আসলে সম্ভবও নয়।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১২: কোরআন যে প্রফেট মুহাম্মদ বা কোন মানুষের নিজস্ব বাণী হতে পারে না তার জ্বলন্ত একটি প্রমাণ হচ্ছে, কোরআনে যেখানে ইব্রাহীম (আঃ), ঈসা (আঃ), ও মূসা (আঃ) প্রমূখদের নাম ডজন ডজন বার উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে প্রফেট মুহাম্মদের নাম এসেছে মাত্র চার বার! প্রফেট মুহাম্মদ নিজে কোরআন লিখলে ডজনেরও বেশী নাম না-জানা ব্যক্তিত্বদের নাম ও তাঁদের বর্ণনা কোরআনে আসাটা অত্যন্ত অস্বাভাবিক, যেখানে তাঁর নিজের সম্বন্ধেই তেমন কিছু নেই এবং তাঁর জীবনের সাথে জড়িত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের নাম পর্যন্তও কোরআনে স্থান পায়নি! অপরদিকে অন্য কোন মানুষ যদি মুহাম্মদকে আল্লাহর মেসেঞ্জার বানিয়ে কোরআন লিখতেন (যদিও অসম্ভব- কারণ প্রফেট মুহাম্মদ সেই সময় জীবিত ছিলেন এবং এই অভিযোগকে কবর দেয়ার জন্য কোরআনই যথেষ্ট) সেক্ষেত্রেও খুব স্বাভাবিকভাবেই কোরআনের “কেন্দ্রীয় চরিত্র” হতেন প্রফেট মুহাম্মদ। যেমন নিউ টেস্টামেন্ট ও গীতার “কেন্দ্রীয় চরিত্র” হচ্ছেন যথাক্রমে যীশুখ্রিস্ট ও শ্রীকৃষ্ণ।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১৩: কোরআনই হচ্ছে একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেটা সেই ধর্মের প্রচারক নিজের জীবদ্বশায় এবং নিজের তত্ত্বাবধানে লিখে সমাপ্ত করে গেছেন। অপরদিকে অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ কিছুটা হাদিসের মতন। অন্যান্য ধর্মের প্রচারকদের মৃত্যুর অনেক পর তাঁদের নামে ধর্মগ্রন্থ লিখা হয়েছে। কোন কোন ধর্মগ্রন্থে আবার সেই ধর্মের প্রচারককে গড বা গডের পুত্র বানিয়ে দেয়া হয়েছে।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১৪: কোরআনের অসংখ্য আয়াতে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এবং সরাসরি বিশ্বাস-অবিশ্বাস ও ধর্মীয় স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে (১৮:২৯, ৬:১০৪, ১০:৯৯, ১৭:১৫, ৪২:৪৮, ৬:১০৮, ৭৬:৩, ১০৯:৬, ২:২৫৬)। অন্য কোন ধর্মগ্রন্থে এভাবে সরাসরি বিশ্বাস-অবিশ্বাস ও ধর্মীয় স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে বলে মনে হয় না।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১৫: কোরআনে এমন কোন শিক্ষা নেই যেটা মানবতার বিরুদ্ধে যেতে পারে। কোরআনে এমন কোন মতবাদ বা বিশ্বাসও নেই যার দ্বারা পার্থিব জগতে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে ফায়দা লোটা সম্ভব। যেমন: জন্মান্তরবাদ ও অরিজিনাল সিন। কোরআনে এমনকি পৌরোহিত্যকেও বাতিল করা হয়েছে (৯:৩১, ৯:৩৪, ২:৪১, ২:১৭৪)। কোরআন অনুযায়ী স্রষ্টার সাথে মানুষের সরাসরি সম্পর্ক- কোনরকম মধ্যস্থতাকারী নেই।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১৬: কোরআনই সম্ভবত একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাসীদের জন্য বেশ কিছু যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে এবং সেই সাথে সমালোচকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দেয়া হয়েছে। কোরআনের স্বর ও বাচনভঙ্গীও অন্য যে কোন গ্রন্থ বা ধর্মগ্রন্থ থেকে অসাধারণভাবে আলাদা। কোরআনে মাঝে-মধ্যেই পাঠকদের প্রতি প্রশ্ন ও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি কোন একটি বিষয়ে বর্ণনা দেয়ার পর বিশ্বাসের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এভাবে: Think ... Ponder ... Reflect ... Pay heed ... the Quran is for those who possess intelligence ... Will you not use your sense? ... Do you not understand? ... If you are in doubt, then consider this or that ... Which of the favours of your Lord will you deny? ... Will you not then believe? (২২:৫-৭, ৩:১৯০, ১০:২৪, ১৩:৩, ৩০:৮, ৩৯:২৭, ৭৫:৩-৪, ৬:৫০, ২১:১০, ২১:৩০, ২৩:১২-১৬, ৪১:৫৩, ৪৭:২৪, ৫২:৩৫-৩৬, ৫৫:১-৭৮)।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১৭: কোরআনের একটি সুরাতে সংক্ষেপে গডের সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে- যাকে বলে টাচস্টোন-অফ-থিয়লজি (১১২:১-৪)। যে কোন গডের ক্ষেত্রে এই সংজ্ঞা প্রয়োগ করে দেখা যেতে পারে।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১৮: ক্রিস্টিয়ান স্কলাররা যেহেতু কোরআন নিয়ে গবেষণা করেন সেহেতু তারা কোরআন সম্পর্কে ভালভাবেই অবগত। তারা এমনকি প্রফেট মুহাম্মদকেও কোরআনের অথার মানতে নারাজ! অবস্থার উপর নির্ভর করে কখনো বলা হয় কোরআন হচ্ছে মুহাম্মদের বাণী। কখনো বলা হয় ইহুদি রাবাইদের বাণী! কখনো বলা হয় ক্রিস্টিয়ান পাদ্রীদের বাণী! কখনো বলা হয় স্যাটানের বাণী! কখনো বলা হয় ডেভিলের বাণী! কখনো বলা হয় মৃগী রোগীর বাণী! কখনো বা আবার বলা হয় মুহাম্মদের কোন এক সেক্রেটারির বাণী! তাহলে কোন্টি সত্য! সবগুলো তো আর সত্য হতে পারে না! মজার বিষয় হচ্ছে তারা একই সাথে সবগুলোকেই সত্য দেখতে চায়! প্রায় চল্লিশ জন অথার মিলে প্রায় পনেরশ’ বছর ধরে যেহেতু বাইবেল লিখা হয়েছে সেহেতু কোরআনের ক্ষেত্রে তারা এমনকি প্রফেট মুহাম্মদকেও একা ক্রেডিট দিতে লজ্জাবোধ করেন! মানব জাতির ইতিহাসে দ্বিতীয় কোন গ্রন্থের বিরুদ্ধে যেহেতু এরকম বিজেয়ার (Bizarre) ও র্যা ন্ডম (Random) মতামত নেই সেহেতু এ থেকে একটি বিষয় সুস্পষ্ট যে, কোরআনে মানুষের চেয়ে বড় কোন শক্তি কাজ করেছে।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-১৯: অন্যান্য ধর্ম এমন কিছু আলৌকিকতা ও বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে যেগুলো ধর্মগ্রন্থ দিয়ে কোনভাবেই প্রমাণ করা সম্ভব নয় বা এমনকি যৌক্তিক কোন ভিত্তিও নেই। অন্যদিকে ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস দাঁড়িয়ে আছে কোরআনের উপর ভিত্তি করে। অর্থাৎ ইসলামের ভিত্তি হচ্ছে কোরআন (২৯:৫১, ৩০:৫৮), যেটা যুক্তির দ্বারা খণ্ডনযোগ্য। প্রকৃতপক্ষে ইসলামের মৌলিক ভিত্তি হচ্ছে একক গড ও গডের মেসেঞ্জারে বিশ্বাস। একক গডের অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার চেয়ে বড় বোকামি আর দ্বিতীয়টি নেই। এবার প্রশ্ন হচ্ছে, গড থেকে থাকলে তাঁর পক্ষে মানুষের সাথে যোগাযোগ করাটা স্বাভাবিক ও সম্ভব কি-না। উত্তর হচ্ছে, অবশ্যই স্বাভাবিক এবং বিষয়টি বিজ্ঞানসম্মতও বটে (যেমন: বেতার তরঙ্গ)। উদাহরণস্বরূপ, জাতিসংঘের মহাসচিব ইচ্ছে করলে জাতিসংঘে বসেই বাংলাদেশের একজন মানুষের কাছে বিভিন্ন মাধ্যমে তাঁর বাণী পৌঁছে দিতে পারেন। অতএব “গড ও গডের মেসেঞ্জার” সম্পূর্ণ যৌক্তিক একটি বিশ্বাস।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-২০: কোরআনে মানুষকে নেচার পর্যবেক্ষণের জন্য যেভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে- এই পৃথিবীর অন্য কোন ধর্মগ্রন্থে সেভাবে উৎসাহিত করা হয়নি। কোরআনের বেশ কিছু বক্তব্য প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানের সাথে সহমতও পোষণ করে। তবে একটি গ্রন্থের কিছু বক্তব্য বিজ্ঞানের সাথে সহমত পোষণ করা মানেই কিন্তু সেই গ্রন্থটি এমনি এমনি গডের বাণী হয়ে যায় না। শর্ত-১ ও শর্ত-২ পূরণ করার পরই কেবল এই বিষয়টাকে একটি যুক্তি হিসেবে ধরা যেতে পারে।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-২১: কোরআনের কিছু সাংখ্যিক মাহাত্ম্য সত্যিই আশ্চর্যজনক।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-২২: কোরআন এমন একটি গ্রন্থ যেটি পড়তে গেলে পাঠকের মন কখনো স্রষ্টার দিকে...কখনো স্রষ্টার মেসেঞ্জারের দিকে...কখনো মহাবিশ্বের উৎপত্তির দিকে...কখনো মানুষের উৎপত্তির দিকে...কখনো মহাকাশ ও গ্রহ-নক্ষত্রের দিকে...কখনো আকাশ-বাতাস ও ঝড়-বৃষ্টির দিকে...কখনো নদ-নদীর দিকে...কখনো সমুদ্রের দিকে...কখনো পাহাড়-পর্বতের দিকে…কখনো গাছ-পালা-ফল-মূলের দিকে...কখনো পশু-পাখির দিকে...কখনো বিজ্ঞানের দিকে...কখনো দর্শনের দিকে...কখনো কবিতার দিকে...কখনো সাহিত্যের দিকে...কখনো ইতিহাসের দিকে...কখনো ইহুদীদের দিকে...কখনো ক্রিস্টিয়ানদের দিকে...কখনো সাবিয়ানদের দিকে...কখনো ম্যাজিয়ানদের দিকে...কখনো পেগানদের দিকে...কখনো মুসলিমদের দিকে...কখনো বিশ্বাসীদের দিকে...কখনো অবিশ্বাসীদের দিকে...কখনো সামাজিক আইন-কানুনের দিকে...কখনো অর্থনীতির দিকে...কখনো নৈতিকতার দিকে...কখনো যুদ্ধের দিকে...কখনো নামাজ-রোযার দিকে...কখনো চ্যারিটির দিকে...কখনো এতিম-বিধবাদের দিকে...কখনো মা-বাবা-ভাই-বোনের দিকে...কখনো প্রতিবেশীর দিকে...কখনো নারী-পুরুষের দিকে...কখনো বিয়ে-শাদীর দিকে...কখনো জান্নাত-জাহান্নামের দিকে...ইত্যাদি...ইত্যাদি...ইত্যাদির দিকে যাবে। অধিকন্তু, কোরআনই হচ্ছে একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেটিকে দেড় বিলিয়নেরও বেশী মানুষ মনে-প্রাণে এই মহাবিশ্বের স্রষ্টার বাণী হিসেবে বিশ্বাস করে, যথাসাধ্য অনুসরণ করার চেষ্টা করে, এবং সেই সাথে ডিফেন্ডও করে। এমন গ্রন্থ পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই!
--------------------------------------------------------------------------
কেস-২৩: কোরআন যে সত্যি সত্যি একটি লিভিং মিরাকল তার জ্বলন্ত একটি প্রমাণ হচ্ছে ৯-১১ নাটক। ৯-১১ নাটককে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপী ইসলাম, মুসলিম, ও প্রফেট মুহাম্মদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে যে ঘৃণা-বিদ্বেষ ও অপপ্রচার চালানো হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে তা চিন্তারও বাহিরে। অথচ ৯-১১ নাটকের পর খোদ আমেরিকাতেই ইসলাম গ্রহণের হার সবচেয়ে বেশী। পাশাপাশি বৃটেন, জার্মানি, ও ফ্রান্স তো আছেই। একে মিরাকল ছাড়া আর কী-ই বা বলা যায়! এর একমাত্র কারণ হচ্ছে কোরআন। ৯-১১ এর মতন ঘটনাকে কেন্দ্র করে অন্য কোন ধর্ম ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ঘৃণা-বিদ্বেষ ও অপপ্রচার চালানো হলে অন্যান্য ধর্মের লোকজন কি সেই ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হবে। কোরআনের আরেকটি মিরাকল হচ্ছে, ইসলাম গ্রহণের পর অনেকেই আবার তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ ইসলাম প্রচারে ব্যয় করেন। ইসলাম প্রচারে তাদের অসাধারণ দৃঢ়তা ও আগ্রহ সত্যিই অবাক করার মতন। তারা এতটাই ডিভোটেড, এতটাই প্রাউড, ও এতটাই কনফিডেন্ট যে, তাদের দেখলে জন্মসূত্রে মুসলিমরা লজ্জা পাবে! কারো বিশ্বাস না হলে কোথাও না যেয়ে শুধুমাত্র ইউটিউবে Sheikh Yusuf Estes, Dr. Gary Miller, Abdur Raheem Green, Dr. Bilal Philips, Khalid Yasin, Yusuf Islam, Yusuf Chambers, Dr. Murad Hoffman, Prof. Jeffery Lang, Hamza Yusuf Hanson, Yassir Fazaga, Abdal-Hakim Murad, Idris Tawfiq, Abdullah Hakim Quick, Malcolm X, Michael Wolfe, Dr. Ingrid Mattson, Yvonne Ridley ইত্যাদি নাম লিখে সার্চ দিয়ে তাদের লেকচারগুলো শোনা যেতে পারে। এঁরা ছাড়াও ইউটিউবে আরো অনেকে আছেন। অন্যান্য ধর্মেও কম-বেশী ধর্মান্তরিত হয়। কিন্তু ধর্মান্তরিত হওয়ার পর সেই সকল ধর্ম প্রচারের জন্য তাদের মধ্যে তেমন কোন আগ্রহ দেখা যায় না। তার মানে তারা আবেগ অথবা কোন কিছুর ফাঁদে পড়ে ধর্মান্তরিত হয়।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-২৪: কোরআন বহির্ভূত প্রমাণ। তৌরাত ও ইঞ্জিলে একজন প্রফেট সম্পর্কে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী আছে। বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, সেই ভবিষ্যদ্বাণীগুলো প্রফেট মুহাম্মদ ছাড়া অন্য কারো সাথে খাপ খায় না। এমনকি কোরআনেও দাবি করা হয়েছে যে, মুহাম্মদই হচ্ছেন তৌরাত ও ইঞ্জিলে উল্লেখিত প্রফেট (৭:১৫৭, ৬১:৬)। তৌরাত ও ইঞ্জিলে সত্যি সত্যি ভবিষ্যদ্বাণী না থাকলে কেউ এমনি এমনি এভাবে দাবি করতে পারেন না নিশ্চয়।
--------------------------------------------------------------------------
কেস-২৫: কোরআন এমন একটি গ্রন্থ, যে গ্রন্থে অবিশ্বাস করা মানে প্রফেট মুহাম্মদকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মিথ্যাবাদী ও প্রতারক হিসেবে বিশ্বাস করা। কারণ প্রফেট মুহাম্মদ দীর্ঘ তেইশ বছরে কখনোই কোরআনকে নিজের বাণী বলে দাবি করেননি। তিনি একদম প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কোরআনকে এই মহাবিশ্বের স্রষ্টার রেভিলেশন বলে দাবি করেছেন। ফলে কোরআনকে প্রফেট মুহাম্মদ বা অন্য কারো বাণী বলাটা অযৌক্তিক, অনৈতিক, এবং সেই সাথে অন্ধ-বিশ্বাসও বটে।
জায়গার স্বল্পতার কারণে বিস্তারিত লিখা সম্ভব হলো না। তথাপি নিরপেক্ষ ও মুক্তমনে উপরের সবগুলো কেস সার্বিকভাবে বিবেচনা করে দেখুন তো কোরআনকে কোন মানুষের বাণী হিসেবে আরোপ করা যায় কি-না। কোরআনে বিশ্বাসের স্বপক্ষে বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে কেস দাঁড় করিয়েছেন। আগে তো কেস দাঁড় করাতে হবে- তারপরই না কেবল সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের প্রশ্ন আসবে। ইহাই যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিক নিয়ম। ইচ্ছে করলে যে কেউ, যে কোন সময়, উপরোল্লেখিত কেসগুলো যাচাইও করতে পারেন।
-------------------------------------------------------------------------
লেখাটা কপি পেষ্ট। মূল লেখক কে জানি না। আল্লাহ তাকে তার এই কষ্টের বিনিময়ে জান্নাত দান করুন। আমীন।

""আপা কেন আরেকবার ক্ষমতায় আসতে চাইতেছেন না?""
ওয়েটিং রুমে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম সেদিন। একজন প্রবীণ লোক আমার পাশের আসনে বসলেন। তারপর আমার মুখটা নিরীক্ষণ করে বললেন, ‘ছোট ভাই, আপনি না লেখক। পেপারে লেখেন?’
‘জি।’
‘আপনি কি নেত্রীকে একটা কথা বলতে পারবেন? আমি ১৯৭৫ সালের পর প্রতিবছর ১৫ আগস্টে মিলাদের আয়োজন করি নিজের গ্রামে। একবার তো তখনকার সরকারের লোকজন আমার খিচুড়ির হাঁড়িপাতিল সব উল্টায়া দিছিল। কত জুলুম-অত্যাচার সহ্য করছি। বাড়িতে বঙ্গবন্ধুর ছবি টাঙাতে পারি নাই বলে বঙ্গবন্ধুর ছবিওয়ালা টাকা রাখছিলাম। নেত্রীকে বলবেন, ওনাকে মিনতি করি, উনি যেন আরেকবার ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসেন।’
আমি হেসে বলি, ‘এটা আপনাকে মিনতি করতে হবে কেন? উনি তো নিজেই চাইবেন আরেকবার ক্ষমতায় ফিরে আসতে!’
ভদ্রলোক বললেন, ‘আরে না। উনি মনে হয় চান না, আরেকবার উনি ভোটে জেতেন, সেইটা চাইলে কেউ এত উল্টাপাল্টা কাজ করতে পারে? ওনার এক নম্বর শত্রু জামাত, পাকিস্তানি চক্র। এক নম্বর প্রতিপক্ষ বিএনপি। ওনার শত্রু তারা, যারা তাঁকে মারার জন্য বোমা পাতছিল। বোমা মারছিল। বাকিরা তো ওনার শত্রু না। বড়জোর সমালোচক। উনি শত্রুদের ঘায়েল না করে সমালোচকদের পিছনে সময় নষ্ট করতেছেন কেন? উনি কেন বন্ধুদের শত্রু বানাচ্ছেন? শত্রুর সংখ্যা বাড়ায়া ফেলছেন? তার মানে কী, জানেন? উনি আরেকবার ভোটে জিততে চান না। উনাকে বলেন, প্লিজ, উনি যেন আরেকবার ক্ষমতায় ফিরে আসেন। আর সেটা ইলেকশনে জিতে। মানুষের ভোট পেয়ে।’
আমি ভদ্রলোকের চোখের দিকে তাকাই। তাঁর চোখে পানি ছলছল করছে। তিনি আকুল স্বরে বলেন, ‘আপা কেন আরেকবার ক্ষমতায় আসতে চাইতেছেন না? আমার ট্রেন এসে গেছে, আমি যাই।’ বলে তিনি ওয়েটিং রুম ত্যাগ করেন।
চট্টগ্রামগামী ট্রেনে বসে লেখা.......
copy from prothom alo...
masumbhuiyan0@gmail.com
haire amar sonar Bangladesh tor aki obosta?
‘জি।’
‘আপনি কি নেত্রীকে একটা কথা বলতে পারবেন? আমি ১৯৭৫ সালের পর প্রতিবছর ১৫ আগস্টে মিলাদের আয়োজন করি নিজের গ্রামে। একবার তো তখনকার সরকারের লোকজন আমার খিচুড়ির হাঁড়িপাতিল সব উল্টায়া দিছিল। কত জুলুম-অত্যাচার সহ্য করছি। বাড়িতে বঙ্গবন্ধুর ছবি টাঙাতে পারি নাই বলে বঙ্গবন্ধুর ছবিওয়ালা টাকা রাখছিলাম। নেত্রীকে বলবেন, ওনাকে মিনতি করি, উনি যেন আরেকবার ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসেন।’
আমি হেসে বলি, ‘এটা আপনাকে মিনতি করতে হবে কেন? উনি তো নিজেই চাইবেন আরেকবার ক্ষমতায় ফিরে আসতে!’
ভদ্রলোক বললেন, ‘আরে না। উনি মনে হয় চান না, আরেকবার উনি ভোটে জেতেন, সেইটা চাইলে কেউ এত উল্টাপাল্টা কাজ করতে পারে? ওনার এক নম্বর শত্রু জামাত, পাকিস্তানি চক্র। এক নম্বর প্রতিপক্ষ বিএনপি। ওনার শত্রু তারা, যারা তাঁকে মারার জন্য বোমা পাতছিল। বোমা মারছিল। বাকিরা তো ওনার শত্রু না। বড়জোর সমালোচক। উনি শত্রুদের ঘায়েল না করে সমালোচকদের পিছনে সময় নষ্ট করতেছেন কেন? উনি কেন বন্ধুদের শত্রু বানাচ্ছেন? শত্রুর সংখ্যা বাড়ায়া ফেলছেন? তার মানে কী, জানেন? উনি আরেকবার ভোটে জিততে চান না। উনাকে বলেন, প্লিজ, উনি যেন আরেকবার ক্ষমতায় ফিরে আসেন। আর সেটা ইলেকশনে জিতে। মানুষের ভোট পেয়ে।’
আমি ভদ্রলোকের চোখের দিকে তাকাই। তাঁর চোখে পানি ছলছল করছে। তিনি আকুল স্বরে বলেন, ‘আপা কেন আরেকবার ক্ষমতায় আসতে চাইতেছেন না? আমার ট্রেন এসে গেছে, আমি যাই।’ বলে তিনি ওয়েটিং রুম ত্যাগ করেন।
চট্টগ্রামগামী ট্রেনে বসে লেখা.......
copy from prothom alo...
masumbhuiyan0@gmail.com

এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)